যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ওয়েবকুপার বার্ষিক সাধারণ সভাকে কেন্দ্র করে যে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রছাত্রীরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত শনিবারের ঘটনাবলী এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তের ওপর শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ তোলা হয় এবং এর ফলস্বরূপ তাঁর রক্তচাপ বেড়ে যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, তাঁকে দশদিনের জন্য বেড রেস্ট নিতে বলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, উপাচার্যের শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি শাসনের ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন।
এদিকে, আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং উপাচার্যের প্রতি তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেছে। তারা দাবি করেছে যে, বুধবার বিকেল ৪টার মধ্যে উপাচার্য তাঁদের সঙ্গে সরাসরি বা ভার্চুয়ালি কথা বলবেন। যদি উপাচার্য এই সময়সীমার মধ্যে তাদের সাথে কথা না বলেন, তাহলে ছাত্রছাত্রীরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ছাত্ররা বলছে, উপাচার্য ছাত্রদের অভিভাবক এবং ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া যে ধরনের ঘটনা, তার দায়ভার তাকে নিতে হবে।
উল্লেখযোগ্য যে, এই আন্দোলন শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি শিক্ষাব্যবস্থার একটি বৃহত্তর প্রশ্নের ওপর আলোকপাত করছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক সময়গুলোতে ছাত্রদের নিরাপত্তা ও তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর একাধিক প্রশ্ন উঠেছে।
গত শনিবারের ঘটনা শুধু উপাচার্যের ওপর হামলার অভিযোগ নয়, বরং এটি আরও বড় একটি সিস্টেমিক সমস্যা বা প্রশাসনিক অব্যবস্থার পরিচায়ক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে একটি সংকেতও হতে পারে, যেখানে ছাত্ররা নিজেদের অধিকার এবং নিরাপত্তার দাবিতে আরও বৃহত্তর একক ঐক্যবদ্ধ হয়ে গঠনমূলক প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছে।
পড়ুয়ারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা এখন আর চুপ করে বসে থাকবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য তারা দাবি আদায়ের পথেই চলে যাবে। তাদের দাবি যে শুধু উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার নয়, বরং তাদের নিরাপত্তা এবং অধিকার নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।
এখন, সবার নজর থাকবে বুধবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত। যদি উপাচার্য তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তবে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হতে পারে। কিন্তু যদি উপাচার্য কথা না বলেন, তাহলে এই আন্দোলন আরও শক্তিশালী রূপ নিতে পারে এবং তা ক্যাম্পাসের বাইরে বৃহত্তর আকার ধারণ করতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই সংকটের সমাধান কীভাবে হয় এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে।