আরজি কর হাসপাতালে (RG Kar Case) তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রাইয়ের নাম। শুক্রবার শিয়ালদহ কোর্টে সঞ্জয় রাইয়ের মামলা ধার্য করা হয়েছিল। এদিন শিয়ালদহ কোর্ট অভিযুক্ত সঞ্জয়কে আগামী ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। ফলে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এখন জেল হেফাজতেই থাকবেন তিনি। তবে এসবের মধ্যে সামনে এল ধৃত সঞ্জয় রাইয়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষার কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।
শুক্রবার শিয়ালদহ কোর্টে সঞ্জয়ের আইনজীবী আগেই জানিয়েছিলেন যে, ধৃত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেছে। সেইসঙ্গে তাঁর আইনজীবী এও জানিয়েছে, ধৃত দাবি করলেও তাঁর বক্তব্য যাচাই করার যে প্রয়োজন রয়েছে তা তিনি মেনে নিয়েছেন। তবে শুধু তাই নয়, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতেই যে অভিযুক্ত পলিগ্রাফ পরীক্ষায় রাজি হয়েছেন সেকথাও জানিয়েছেন তিনি। ঠিক কী তথ্য উঠে এসেছে সঞ্জয়ের পলিগ্রাফ টেস্টে? সূত্রের খবর অনুযায়ী, পলিগ্রাফ পরীক্ষার সময় মূলত ১০টি প্রশ্ন করা হয়েছিল অভিযুক্তকে।
সেই পলিগ্রাফ পরীক্ষায় সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তিনি যে পুলিশ লেখা বাইকটি ব্যবহার করতেন সেটা কার কাছ থেকে পেয়েছিলেন? এ বিষয়ে ধৃত জানিয়েছেন, কলকাতা পুলিশের এএসআই (অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর) অনুপ দত্ত তাঁকে ওই বাইকটি ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন। এরপরেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি ৮ অগস্ট রাতে কেন আরজি কর হাসপাতালে গিয়েছিলেন? সঞ্জয় জানিয়েছেন, তাঁর বন্ধুর দাদা সেখানে ভর্তি ছিলেন। তাই তাঁকে দেখতে তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তাই এদিনের ঘটনার সঙ্গে যে ধৃত জড়িত নন, তা অভিযুক্ত নিজেই অস্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছেন সঞ্জয়ের আইনজীবী।
তিনি কতটা পড়াশোনা করেছেন সেই বিষয়ে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক পাশ। এর পাশাপাশি পলিগ্রাফ পরীক্ষায় তাঁর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল তিনি খুন করে সেমিনার হল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় কীভাবে ঘর সাজিয়ে এসেছিলেন? এর জবাবে সঞ্জয় সাফ জানিয়েছেন, তিনি খুন করেননি। তাই ঘর সাজানোর প্রশ্নই ওঠে না। আর এসবের পাশাপাশি সঞ্জয়ের আইনজীবী এক চাঞ্চল্যকর তথ্যও তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পলিগ্রাফ পরীক্ষার সময় সঞ্জয় দাবি করেছেন, আরজি কর নয় বরং অন্য একটি সরকারি হাসপাতালে গেলে জানতে পারা যাবে তিনি কেমন মানুষ।
কারণ, আরজি কর নয়, ওই হাসপাতালেই তাঁর বেশি যাতায়াত ছিল। সেখানকার কর্মীরা তাঁকে চেনেন বলেও দাবি করেছেন অভিযুক্ত। তাঁর আইনজীবীর বক্তব্য, অভিযুক্তের বিশ্বাস ওই হাসপাতালের কর্মীরা তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে সঠিক তথ্য দিতে পারবেন। তাহলে গ্রেফতারির পর জেরার মুখে আরজি কর ঘটনায় নিজের অপরাধের কথা অভিযুক্ত কেন স্বীকার করেছিল? এ বিষয়ে সঞ্জয় আইনজীবীকে জানিয়েছেন, পুলিশ তাঁর উপর অত্যাচার করায় তিনি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে পলিগ্রাফ পরীক্ষায় অভিযুক্ত বারবারই দাবি করেছেন যে, এই অপরাধের সঙ্গে তিনি জড়িত নন।