ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে মূলত বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের বাস। এই অঞ্চলে প্রচুর কলকারখানা থাকার জন্য বাইরের রাজ্য থেকে অনেক মানুষ এইখানে এসে আস্তানা গেড়েছে। বংশনানুক্রমে তাঁরা রয়ে গিয়েছে এই শিল্পাঞ্চলের আশেপাশে। কিন্তু ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে অর্জুন সিং জয়ী হওয়ার পর থেকে অবাঙালী দাপট বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ নজরে এসেছে। নজরে এসেছে ধর্মপ্রীতি এবং শিবচর্চার হিড়িক। যদিও এইটা ২০১৯ সালের পর থেকেই নয়, তার আগেও ছিল। তবে একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় এবং সীমিত ক্ষেত্রে।
প্রসঙ্গত ২০১৯ সালে অর্জুন সিং লোকসভা ভোটে জয়ী হওয়ার পর থেকে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে হিন্দিভাষীদের দাপট বেড়েছে বলে অভিযোগ। একজন দাপুটে তৃণমূল যুব নেতা, যিনি ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পরে বেশ কিছুদিন ঘরছাড়া ছিলেন তিনি জানালেন, ”এই অঞ্চলে বাঙালিরা ভয়ে থাকে! এত হিন্দিভাষীদের দাপট যে রাস্তায় বেরোতেই ভয় হয়।” তবে তাঁর অভিযোগকে ছাপিয়ে আরও বড় অভিযোগ করলেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন, ” আমি নৈহাটির গরিফা অঞ্চলে থাকি। এখানে প্রায়ই কিছু অবাঙালি বাড়িতে একটা বড় চোঙ লাগিয়ে সকাল থেকে উচ্চস্বরে হিন্দি গান চালিয়ে বিকেলের দিকে শিবচর্চার আসর বসে। আমাদের কোনও কাজ করতে পারি না কারণ এত উচ্চস্বরে এগুলো হয়।”
তাঁর সঙ্গে একই সুরে সুর মেলালনে আরও বেশ কয়েকজন! তবে কেউই নাম প্রকাশ করতে চাইলেন না। তবে এই ঘটনা শুধু নৈহাটি অঞ্চলের না, কাকিনাড়া, জগদ্দল, শ্যামনগর, পলতা এবং ব্যারাকপুরের কিছু অঞ্চলেরও মানুষদের অভিযোগ। কেউ কেউ তো আবার বললেন একই সঙ্গে পাশাপাশি দুই-তিন বাড়িতে শিবচর্চার আসর বসে। সেই আসর প্রায়ই বসে। কোথাও কোথাও তো সপ্তাহে দু’দিন কিংবা তিনদিনও। কারুর অভিযোগ, ”আমাদের বাড়িতেও তো ঠাকুরের অনুষ্ঠান হয়, কিন্তু আমরা তো চোঙ লাগিয়ে এইসব করি না।”
বাংলা পক্ষের পুরধা ব্যক্তি গর্গ চট্টোপাধ্যায়কে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, ” এটা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। আমার এই নিয়ে কোনও মতামত নেই।” একটু থেমে তিনি আরও বললেন যে, ” আমাদের আন্দোলন বাঙালি নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সেই নিয়ে। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে সব চাকরি তো ইউপি-বিহারের লোকেরা নিয়ে নিচ্ছে, নেতাও ওই রাজ্যের! বাঙালিরা কিছুই পাচ্ছে না।”