আজ, বুধবার, বাংলায় আসছেন দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। দিনভর তাঁর কর্মসূচি ঘিরে রাজ্যজুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ থাকছে, যাতে রাষ্ট্রপতির সফরে কোনওরকম অসুবিধা না হয়। এদিন সকালে বায়ুসেনার একটি বিশেষ বিমানে দিল্লি থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। কলকাতা পৌঁছে প্রথমেই রওনা হন নদিয়ার কল্যাণীর উদ্দেশে।
কল্যাণীতে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস)-এর প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য রাখবেন এবং নতুন গ্র্যাজুয়েট হওয়া তিনজন কৃতী ছাত্রের হাতে শংসাপত্র তুলে দেবেন। সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতির ভাষণে জাতীয় শিক্ষা নীতি, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং দেশের স্বাস্থ্যখাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা থাকতে পারে।
কল্যাণীর এইমস সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পর বিকেলের দিকে তিনি কলকাতার উত্তরাংশে অবস্থিত বিখ্যাত দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরে পুজো দিতে যাবেন। এই ধর্মীয় দর্শন ঘিরে ইতিমধ্যেই দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানায়, রাষ্ট্রপতির জন্য বিশেষ পূজার আয়োজন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মন্দিরে প্রবেশের আগে ও পরে কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনী থাকবে। স্থানীয় থানার পুলিশ ছাড়াও রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতি দফতরের নিরাপত্তা আধিকারিকরা যৌথভাবে নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
দক্ষিণেশ্বর দর্শন শেষে রাতে তিনি থাকবেন কলকাতার রাজভবনে। সেখানে তাঁর সম্মানে আয়োজন করা হয়েছে এক নির্ধারিত নৈশভোজ। আগামীকাল, বৃহস্পতিবার, রাষ্ট্রপতি একটি উচ্চপর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেবেন। এই বৈঠকে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন, রাজ্য-কেন্দ্র সম্পর্ক এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, বৈঠক শেষেই দুপুর নাগাদ তিনি কলকাতা থেকে রওনা দেবেন ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশে। তাঁর পরবর্তী সফরের অংশ হিসেবে ঝাড়খণ্ডে একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
রাষ্ট্রপতির এই সফরের কারণে আজ কলকাতার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ট্র্যাফিক বিভাগ জানায়, বিশেষ করে দক্ষিণেশ্বর অভিমুখী রুটে যান চলাচলে কিছুটা ধীরতা থাকবে। সাধারণ মানুষের যাতে সমস্যায় না পড়তে হয়, সে জন্য আগেভাগেই বিকল্প পথের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর এই সফর শুধুমাত্র একটি প্রশাসনিক বা আনুষ্ঠানিক সফর নয়, বরং এই সফর রাজ্যবাসীর জন্য এক গর্বের মুহূর্ত। কল্যাণী এইমস-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ এক প্রতিষ্ঠানের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির উপস্থিতি শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চলেছে। পাশাপাশি, দক্ষিণেশ্বর মন্দির দর্শন ও রাজভবনে তাঁর উপস্থিতি বাংলার সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক পরিমণ্ডলেও এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।