গার্ডরেল সরিয়ে এগোতেই মারমুখী পুলিশ,ধস্তাধস্তিতে আহত বহু শিক্ষক

বিক্ষোভে উত্তাল শহরের রাজপথ। আজ, সোমবার সকালে বঙ্কিম সেতু হয়ে নবান্নমুখী মিছিল নিয়ে এগোচ্ছিল চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। বৃষ্টিভেজা সকালে শহর যখন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে, তখনই বিক্ষোভকারীদের…

গার্ডরেল সরিয়ে এগোতেই মারমুখী পুলিশ,ধস্তাধস্তিতে আহত বহু শিক্ষক

বিক্ষোভে উত্তাল শহরের রাজপথ। আজ, সোমবার সকালে বঙ্কিম সেতু হয়ে নবান্নমুখী মিছিল নিয়ে এগোচ্ছিল চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। বৃষ্টিভেজা সকালে শহর যখন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে, তখনই বিক্ষোভকারীদের স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে ধর্মতলার অলিন্দ। লক্ষ্য, রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কার্যালয়—নবান্ন। উদ্দেশ্য, দীর্ঘদিনের নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো এবং স্থায়ী সমাধানের দাবি।

   

চাকরি প্রার্থীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা প্রাথমিক শিক্ষক এবং এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় ন্যায্য চাকরির দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনও সমাধান মেলেনি। তাই বাধ্য হয়েই পথে নামতে হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, পোস্টার, যেখানে লেখা ছিল—“আমাদের চাকরি ফেরাও”, “দুর্নীতির বিচার চাই”, “ন্যায্য নিয়োগ চাই”।

ধর্মতলা থেকে বঙ্কিম সেতুর দিকে মিছিল

প্রতিবাদকারীরা ধর্মতলা থেকে মিছিল করে পৌঁছন বঙ্কিম সেতু পর্যন্ত। পুলিশ প্রথম থেকেই চেষ্টা করছিল মিছিলের গতিপথ আটকে দিতে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের জেদে কোনও ভাটা পড়েনি। তাঁরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যান সেতুর ওপরে। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ সেখানে গার্ডরেল দিয়ে ব্যারিকেড করে দেয়।

গার্ডরেল সরিয়ে মল্লিক ফটকের দিকে দৌড়

সেখানে দাঁড়িয়েই উত্তেজনা চরমে ওঠে। হঠাৎ করেই কিছু আন্দোলনকারী ব্যারিকেড সরিয়ে মল্লিক ফটকের দিকে ছুটে যান। পুলিশের তরফে সঙ্গে সঙ্গেই বাধা দেওয়া হয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। মুহূর্তে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ।

ধস্তাধস্তি ও উত্তেজনা ছড়ায়

Advertisements

চোখের পলকে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। মহিলা আন্দোলনকারীদেরও ঠেলে সরিয়ে দেয় পুলিশ। অভিযোগ, কিছু আন্দোলনকারীকে ঘেরাও করে ধাক্কা দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের অনেকে মাটিতে পড়ে যান। কেউ কেউ স্লোগান দিতে দিতে আবারও এগোনোর চেষ্টা করেন। পুলিশ কড়া হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। লাঠিচার্জ না হলেও ধাক্কাধাক্কি চলে বেশ কিছুক্ষণ।

পুলিশের অবস্থান ও প্রশাসনের ভূমিকা

পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভের অনুমতি ছাড়াই মিছিল সংগঠিত হয়েছে। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এই আশঙ্কায় ব্যারিকেড করা হয়েছিল। কিন্তু আন্দোলনকারীরা জোর করে তা ভাঙার চেষ্টা করেন, যার জেরে এই উত্তেজনা।

অন্যদিকে, আন্দোলনকারীদের দাবি— তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের দাবি জানাতে এসেছিলেন। পুলিশ অকারণে শক্তি প্রয়োগ করেছে। তাঁদের সাফ কথা, “আমরা কারও বিরুদ্ধে নই। আমরা শুধু চাই, আমাদের ন্যায্য চাকরি ফেরানো হোক।”

চাপে প্রশাসন?

চলমান নিয়োগ ইস্যুতে রাজ্য সরকারের অবস্থান বহু দিন ধরেই প্রশ্নের মুখে। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। তারা জানাচ্ছেন, একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও মেলেনি সাড়া। তাই এবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়।