ভারতের শীর্ষ পাঁচে নেই কলকাতার কোনও কলেজ

জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান র‍্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক (NIRF) ২০২৫-এর তালিকায় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের (DEU) কলেজগুলি (Kolkata College)শীর্ষ পাঁচটি স্থান দখল করে ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করেছে। হিন্দু…

Kolkata College

জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান র‍্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক (NIRF) ২০২৫-এর তালিকায় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের (DEU) কলেজগুলি (Kolkata College)শীর্ষ পাঁচটি স্থান দখল করে ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত করেছে। হিন্দু কলেজ টানা দ্বিতীয় বছরের জন্য প্রথম স্থান ধরে রেখেছে, এরপর রয়েছে মিরান্ডা হাউস, হংসরাজ কলেজ, কিরোরি মাল কলেজ এবং সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেও “বিশ্ববিদ্যালয়” বিভাগে গত বছরের ষষ্ঠ স্থান থেকে এবার পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। তবে এই তালিকায় কলকাতার কোনো কলেজ শীর্ষ পাঁচে স্থান পায়নি।

   

 ৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এনআইআরএফ র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে। এই র‍্যাঙ্কিং পাঁচটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়: শিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের সম্পদ ও শিক্ষার গুণমান (টিএলআর), গবেষণা ও পেশাদার অনুশীলন (আরপিসি), স্নাতক ফলাফল (জিও), বহির্মুখীতা ও অন্তর্ভুক্তি (ওআই), এবং জনসাধারণের ধারণা (পিআর)।

হিন্দু কলেজ ৭৪.৪৭ স্কোর নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে, যা তার শিক্ষাগত পরিবেশ, গবেষণা সুবিধা এবং প্লেসমেন্ট রেকর্ডের প্রমাণ দেয়। মিরান্ডা হাউস দ্বিতীয়, হংসরাজ তৃতীয়, কিরোরি মাল চতুর্থ এবং সেন্ট স্টিফেন্স পঞ্চম স্থানে রয়েছে। শীর্ষ ৫০টি কলেজের মধ্যে অর্ধেকই দিল্লির, এবং শীর্ষ ১০০-এর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এই শহর থেকে এসেছে।

কলকাতার কলেজগুলির মধ্যে রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ সেন্টেনারি কলেজ এবং সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ এনআইআরএফ ২০২৫-এর তালিকায় শীর্ষ ১০-এ স্থান পেয়েছে, যথাক্রমে ষষ্ঠ এবং অষ্টম স্থানে। রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ সেন্টেনারি কলেজ বিজ্ঞান শিক্ষায় শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পরিচিত এবং স্নাতক ফলাফলে ১০০ স্কোর পেয়েছে।

সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ তার শিল্প সংযোগ, চমৎকার প্লেসমেন্ট রেকর্ড (৮৮.২২) এবং বৈচিত্র্যময় ছাত্র সম্প্রদায়ের জন্য খ্যাত। তবে, এই দুটি কলেজ শীর্ষ পাঁচে জায়গা করে নিতে পারেনি, যা দিল্লির কলেজগুলির প্রভাবশালী উপস্থিতির বিপরীতে কলকাতার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে।

কলকাতা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের শিক্ষা ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, যা বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগে এনআইআরএফ ২০২৫-এ শীর্ষ ১০-এ স্থান পেয়েছে, এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলি ঐতিহ্যগতভাবে শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে, কলেজ বিভাগে কলকাতার প্রতিনিধিত্ব শীর্ষ স্তরে সীমিত।

এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দিল্লির কলেজগুলি গবেষণা সুবিধা, শিল্প সংযোগ এবং প্লেসমেন্টের ক্ষেত্রে বেশি সুবিধা পায়। দিল্লির কলেজগুলি জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের কেন্দ্রীয় অবস্থানের সুবিধা নিয়ে কর্পোরেট এবং সরকারি সংস্থাগুলির সঙ্গে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে।

Advertisements

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলি তাদের শিক্ষক, আধুনিক পরিকাঠামো এবং বৈচিত্র্যময় কোর্সের জন্য বিখ্যাত। উদাহরণস্বরূপ, হিন্দু কলেজ কলা, বিজ্ঞান এবং বাণিজ্যে উৎকৃষ্ট প্রোগ্রাম অফার করে এবং এর প্লেসমেন্ট রেকর্ড অত্যন্ত শক্তিশালী। মিরান্ডা হাউস নারী শিক্ষায় অগ্রণী এবং এর প্রাক্তন ছাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।

হংসরাজ এবং কিরোরি মাল কলেজ তাদের গবেষণা আউটপুট এবং ছাত্র-বান্ধব নীতির জন্য প্রশংসিত। এই কলেজগুলি কেবল শিক্ষাগত শ্রেষ্ঠত্বই নয়, বরং ছাত্রদের সামগ্রিক বিকাশের জন্য প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস জীবন প্রদান করে।

কলকাতার কলেজগুলি, যেমন সেন্ট জেভিয়ার্স এবং রামকৃষ্ণ মিশন, বিজ্ঞান এবং কলায় শক্তিশালী প্রোগ্রাম অফার করে এবং তাদের প্লেসমেন্ট রেকর্ডও উল্লেখযোগ্য। তবে, এনআইআরএফ-এর মানদণ্ডে গবেষণা ও পেশাদার অনুশীলন এবং জনসাধারণের ধারণার ক্ষেত্রে দিল্লির কলেজগুলির তুলনায় তারা কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। কলকাতার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ, যা গবেষণা পরিকাঠামো এবং শিল্প সংযোগ জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করে।

শিক্ষাবিদরা মনে করেন, কলকাতার কলেজগুলির উন্নতির জন্য আরও বিনিয়োগ এবং নীতিগত সহায়তা প্রয়োজন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই গবেষণা ও শিক্ষায় জাতীয় স্তরে প্রভাব ফেলছে, তবে কলেজগুলির জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং শিল্পের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া।

৪১ বছর বয়সে অবসর ভেঙে ২২ গজে ফিরছেন তারকা ক্রিকেটার

এনআইআরএফ ২০২৫-এর তালিকা ভারতের উচ্চশিক্ষার প্রতিযোগিতামূলক প্রকৃতি তুলে ধরেছে। দিল্লির আধিপত্য সত্ত্বেও, কলকাতা, চেন্নাই এবং কোয়েম্বাটুরের কলেজগুলি আঞ্চলিক বৈচিত্র্য যোগ করছে। ভবিষ্যতে কলকাতার কলেজগুলি যদি গবেষণা ও প্লেসমেন্টে আরও উন্নতি করতে পারে, তবে তারা শীর্ষ তালিকায় জায়গা করে নিতে পারে।