কলকাতা বিমানবন্দর (Calcutta Airport) এখন নিরাপত্তা প্রক্রিয়া আরও দ্রুত এবং সহজ করতে উদ্যোগী। সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (CISF) যাত্রীরা যেন নিরাপত্তা চেকের সময় দ্রুত পাস করতে পারেন, তার জন্য কিছু পরিবর্তন এনেছে। আগের মতো যাত্রীরা শুধু অবৈধ সামগ্রী ট্রেতে রাখতেন কিন্তু এখন নির্দিষ্ট কিছু আইটেমের নাম বলা হচ্ছে, যেমন ছুরি বা লাইটার, যাতে যাত্রীরা এগুলো আগে থেকেই ট্রেতে রাখেন।
এই পরিবর্তনটি যাত্রীদের সময় বাঁচাচ্ছে এবং দীর্ঘ সারি বা লাইন ছোট করবে, বলেন CISF কর্মকর্তারা। কলকাতা বিমানবন্দরে এই নতুন পদ্ধতিতে নিরাপত্তা চেক দ্রুত হচ্ছে এবং যাত্রীদের অপেক্ষার সময় কমেছে।
CISF কর্মকর্তারা বলছেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই, হাতে থাকা ব্যাগগুলো কত দ্রুত চেক করা যায়। যাত্রীদের কাছ থেকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিষিদ্ধ সামগ্রী (SRI) নেওয়ার পর, যদি স্ক্যানিংয়ের পরে তা বের করা হয়, তবে তা প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়,’ বলেছেন অজয় কুমার, ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল, CISF, কলকাতা বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে।
তিনি আরও জানান, ‘আমরা এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলোর মাধ্যমে বড় প্রভাব দেখতে পাচ্ছি।’ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা যাত্রীদের কাছে তাদের বোর্ডিং পাস এবং অন্য ইলেকট্রনিক বা ধাতব আইটেম সম্পর্কে ঘোষণা করছেন, যাতে এগুলো সহজেই ট্রেতে রাখা যায়।
CISF কর্মকর্তা বলেন, ‘এখনও কিছু সমস্যা রয়েছে, যেমন অনেক যাত্রী অতিরিক্ত ব্যাগ নিয়ে আসেন। এটা খুব সময়সাপেক্ষ। যাত্রীদের এক টুকরো ক্যাবিন ব্যাগ নিয়ে আসার নিয়মটি অনুসরণ করতে বলা হচ্ছে, যাতে চেকিং দ্রুত হয়।’
এছাড়া, কলকাতা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা বাংলায় প্রশিক্ষিত হচ্ছেন, যাতে তারা যাত্রীদের সঙ্গে আরও ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারেন। এতে করে যাত্রীদের সঙ্গে নিরাপত্তা সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে, যা সময় সাশ্রয়ী হচ্ছে।
কলকাতার বিমানবন্দরের নিরাপত্তা চেকের দীর্ঘ লাইনের সমস্যা একটি পুরানো ঘটনা। তবে CISF কর্মকর্তারা এই প্রক্রিয়া দ্রুত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কলকাতার বড়বাজার এলাকার যাত্রী দেবাশীষ চক্রবর্তী বলেন, ‘পিক আওয়ার্সে নিরাপত্তা চেকিংয়ে ৪৫ মিনিট সময় লেগে যায়। আমি জানি, সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে নিরাপত্তা চেকিংয়ে এই সময় লাগবে।’
এছাড়া, এক অন্য যাত্রী, যিনি মুম্বই থেকে আসেন, জানান, ‘পিক আওয়ার্স ছাড়া সাধারণত ৩০-৪০ মিনিটের মধ্যে চেকিং হয়ে যায়। রাত ৮টার পরে অপেক্ষার সময় কমে যায়।’
কলকাতা বিমানবন্দরে ২,২০০ জন CISF কর্মী নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন। তবে, এই সমস্যা শুধু জনবল নয়। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা চেকিং এর জন্য সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে দুষ্কৃতী চিহ্নিতকরণ, পাসপোর্ট যাচাই এবং প্রতিটি ট্রে চেক করা হচ্ছে। এই নতুন পদক্ষেপের মাধ্যমে যাত্রীদের অভিজ্ঞতা আরও সহজ এবং দ্রুত করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, CISF কর্তৃপক্ষ ৭ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত একটি সাইক্লোথনের আয়োজন করতে যাচ্ছে, যা CISF ডে উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। এই সাইক্লোথনটি গুজরাতের লাখপাট থেকে শুরু হয়ে কন্যাকুমারীতে শেষ হবে। এতে মোট ১২৫ সাইক্লিস্ট ৬,৫৫৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবেন। এর মাধ্যমে CISF জনগণের কাছে তাদের বার্তা পৌঁছাতে চায়।