নবান্ন অভিযানে পুলিশি নিয়ম মানতেই হবে, জানাল হাই কোর্ট

নবান্ন (Nabanna) অভিযানের প্রেক্ষিতে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল। নির্যাতিতার বাবা-মা ৯ অগস্ট নবান্ন (Nabanna) অভিযান ডাকার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজার…

nabanna-protest-must-follow-police-guidelines-rules-calcutta-high-court

নবান্ন (Nabanna) অভিযানের প্রেক্ষিতে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল। নির্যাতিতার বাবা-মা ৯ অগস্ট নবান্ন (Nabanna) অভিযান ডাকার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজার নতুন অধ্যায়। তাঁদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বিরোধী দলগুলির একাংশের সমর্থন মিলতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, রাজ্য সরকার এই অভিযানকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখছে। তাই আগে থেকেই রাজ্যের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে প্রতিবাদ কর্মসূচির বিরোধিতা করা হয়।

বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার রায়ে একদিকে যেমন রাজ্যের আপত্তিকে গুরুত্ব না দিয়ে মৌলিক অধিকারের পক্ষে রায় দিয়েছে, তেমনই আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে কড়া বার্তাও দিয়েছে। আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, কোনও নাগরিক বা গোষ্ঠী প্রতিবাদ জানাতে পারেন, তবে তা করতে হবে আইন এবং পুলিশের গাইডলাইন মেনে। মিছিল বা সভার জন্য পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে এবং নির্দেশিকা মান্য করে চলতে হবে।(Nabanna) 

   

আদালত আরও বলেছে, এই ধরনের প্রতিবাদের ক্ষেত্রে আদালত মৌলিক অধিকার খর্ব করতে পারে না। তাই এই অভিযানে নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রশ্নই ওঠে না। তবে আদালত এটাও বলেছে যে, যদি পুলিশের নির্দেশিকা লঙ্ঘন করে কেউ প্রতিবাদে অংশ নেয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ, আদালত একদিকে মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা দিয়েছে, অন্যদিকে আইনের সীমারেখার মধ্যে থেকে প্রতিবাদ করার শর্তও স্পষ্ট করেছে।

পুলিশ ইতিমধ্যেই বিকল্প প্রতিবাদস্থলের প্রস্তাব দিয়েছে এবং কীভাবে আন্দোলন করা যায়, সেই সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা আন্দোলনকারীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এই নির্দেশিকা অনুযায়ী আন্দোলন কোথায়, কীভাবে এবং কতজন অংশ নিতে পারবেন, তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, আন্দোলনকারীদের সেই বিকল্প প্রতিবাদস্থল গ্রহণ করা কিংবা না করা, তা তাঁদের বিবেচনার বিষয়। তবে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে আইন মেনে চলার কথা পুনরায় স্পষ্ট করা হয়েছে।

Advertisements

এই রায় সামনে আসার পর, আন্দোলনকারী সংগঠনগুলি আদালতের পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানালেও, তাদের তরফে জানানো হয়েছে যে তারা শান্তিপূর্ণ ভাবেই আন্দোলন চালিয়ে যাবে। নির্যাতিতার পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার সকলের আছে, আর সেই চাওয়াকে রাস্তায় এসে জানানো গণতান্ত্রিক অধিকার।

অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের একাংশ মনে করছে, এই আন্দোলনের আড়ালে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে। তাই তারা চাইছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে আগে থেকেই সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

সব মিলিয়ে ৯ অগস্টের নবান্ন অভিযান ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ চড়ছে। আদালতের রায় একদিকে নাগরিক অধিকারকে স্বীকৃতি দিলেও, আইনের শৃঙ্খলার মধ্যে থেকেই আন্দোলনের বার্তা দিয়ে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার দিকেই ইঙ্গিত করেছে। এখন দেখার, নির্ধারিত দিনে কীভাবে এগোয় আন্দোলন এবং কতটা শান্তিপূর্ণভাবে তা বাস্তবায়িত হয়।