বিস্ফোরক পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। চাকরি চুরি হয়েছে, মেনে নিলেন ফিরহাদ। তৃণমূল প্রতিষ্ঠা দিবসে তিনি এমন স্বীকারোক্তি প্রকাশ্যে করেছেন। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে গিয়ে ফিরহাদ বলেন, আমি নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত নই। তিনি আরও বললেন, “চাকরির জন্য টাকা দেওয়া আর মায়ের শরীর থেকে মাংস কেটে নেওয়া এক।”
তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে কলকাতা পুরনিগমের ৮২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির মঞ্চ থেকে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘স্বীকার করতে বাধা নেই, দলের একাংশ দুর্নীতি করেছে। চাকরি চুরি হয়েছে। চাকরির জন্য টাকা নেওয়ার মতো ঘৃণ্য কাজের চেয়ে মায়ের শরীর থেকে মাংস কেটে নেওয়া অনেক ভালো বলে আমি মনে করি।’
দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যেই ফিরহাদ বললেন, “আমরা তৃণমূল কংগ্রেস একটা সংসার। কিছু মানুষ নিশ্চিত ভাবে অন্যায় করেছেন। দুর্নীতি জড়িয়ে পড়েছেন। কিন্তু তা বলে আমরা সবাই নই। হ্যাঁ, আমার বাড়িতেই সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে। তবে চেতলার বুকে কোনও মানুষ দাঁড়িয়ে আজ বলতে পারবে, ফিরহাদ হাকিম কোনও দুর্নীতি করেছেন।২৫ বছরে কোনও কাউন্সির, কোনও প্রমোটার, কারোর কাছ থেকে হাত পেতে একটা পয়সা নিয়েছেন।”
তিনি বললেন, “চাকরির জন্য টাকা দেওয়া আর মায়ের শরীর থেকে মাংস কেটে নেওয়া একই বিষয়।”
প্রসঙ্গত, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করে আসছিলেন, ইডি-সিবিআই- রাজনৈতিক কারণেই সক্রিয়। কিছুদিন আগে একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “পার্থ যদি চোর হয়, তাহলে আইন বিচার করবে। কিন্তু পার্থও চোর, কেষ্টও চোর, ববিও চোর, অভিষেকও চোর, মমতাও চোর? সবাই চোর আর আপনারা সাধু? এই নিয়ে জীবন চলবে না। পার্থর ব্যাপার হলেও মমতাকে টেনে আনা হয়, ববির ব্যাপার হলেও মমতাকে টেনে আনবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি মাথা নত করে রাজনীতি করতে এসেছে? সমাজসেবা করতে এসেছে।”
ফিরহাদের এই বক্তব্যের পরই সরব বিজেপি। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূল মানেই চোর। যে ফিরহাদ আজকে বলছেন, দলের কয়েকজন দুর্নীতি করেছেন, সেই ফিরহাদই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির কয়েকদিন পর বলেছিলেন, যে ভুল হয়েছে পার্থদার একার ভুল নয়, কালেক্টিভ রেসপন্সিবিলিটি। এই দুর্নীতি তৃণমূলের সবার দুর্নীতি। ইডি-সিবিআই-এর কথা আদালতে গিয়ে বলছেন না কেন মুখ্যমন্ত্রী? আদালতে তো মানুষের টাকা খরচ করে বারবার যাচ্ছেন। আবার পরাজিত হয়ে ফিরেও আসছেন।”
তৃণমূল মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়রের বিস্ফোরক দাবির পর বাম মহলেও কটাক্ষ শুরু হয়েছে। নারদা ইস্যু টেনে সিপিআইএমের কটাক্ষ, এবার কি ফিরহাদ কে মন্ত্রীত্ব থেকে সরতে হবে?