পড়ুয়াদের পুষ্টি বৃদ্ধিতে মিড ডে মিলে নতুন উদ্যোগ

নতুন বছরের শুরুতেই রাজ্য সরকার মিড-ডে মিলের (Mid Day Meal Scheme) আওতায় আনছে অতিরিক্ত পুষ্টি। রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অর্থবর্ষে…

Mid Day Meal Initiative to Boost Students' Nutrition

নতুন বছরের শুরুতেই রাজ্য সরকার মিড-ডে মিলের (Mid Day Meal Scheme) আওতায় আনছে অতিরিক্ত পুষ্টি। রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অর্থবর্ষে রাজ্যের ৮৫ লক্ষ ৯৩ হাজার ৭৮৩ জন ছাত্র-ছাত্রীকে প্রতি সপ্তাহে দু’দিন ডিম দেওয়া হবে, যা আগে একদিন দেওয়া হত। এছাড়াও খাবারে অন্তর্ভুক্ত করা হবে পুষ্টিকর ফল। এর জন্য রাজ্য সরকার মাথাপিছু আট টাকা খরচ করবে।

স্কুল শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, মিড-ডে মিলের এই বাড়তি পুষ্টি সংযোজনের সময়সীমা পাঁচ সপ্তাহ হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। স্কুল শিক্ষা দফতরের মতে, অতিরিক্ত অর্থ ব্যবহারের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের ‘ফ্লেক্সি ফান্ড’ থেকে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে। ফান্ডটি ৭৫৬২.৫৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ছিল, যার একটি অংশ দিয়ে ছাত্রদের সাপ্লিমেন্টারি নিউট্রিশন যোগ করা হবে।

   

রাজ্যের শিক্ষকদের সংগঠন, বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানিয়েছেন, তারা বারবার দাবি জানিয়েছেন, প্রাথমিক স্কুলে মাথাপিছু বরাদ্দ ১০ টাকা এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে ১৫ টাকা না বাড়ালে পুষ্টিকর খাবার দেওয়াটা বাস্তবসম্মত হবে না।

রাজ্য মিড-ডে মিল প্রজেক্ট ডিরেক্টর পারমিতা রায় জানিয়েছেন, বাড়তি অর্থ থেকে বাচ্চাদের সাপ্লিমেন্টারি নিউট্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের শেষের দিকে বরাদ্দের পর কিছু টাকা অবশিষ্ট ছিল, তাই তা যথাযথভাবে ব্যবহার করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় শিক্ষা দফতর মিড-ডে মিল বরাদ্দ বৃদ্ধি করার ঘোষণা দেয়। প্রাথমিক স্কুলে প্রতি ছাত্রের জন্য ৭৪ পয়সা এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে এক টাকা ১২ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। তবে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর জানায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাথাপিছু ৬ টাকা ১৯ পয়সা বরাদ্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে কেন্দ্র দেবে তিন টাকা ৭১ পয়সা। উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ৯ টাকা ২৯ পয়সা বরাদ্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে কেন্দ্র দেবে ৫ টাকা ৫৭ পয়সা এবং রাজ্য দেবে ৩ টাকা ৭২ পয়সা।

শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি বিশেষ সময়ের জন্য নয়, বরং সারা বছর ধরে এই ধরনের পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করা উচিত। তিনি আরও বলেন, সমস্ত বিদ্যালয়ের মধ্যে এই কার্যক্রম সঠিকভাবে চালানো উচিত, এবং সঠিক নজরদারি প্রয়োজন।

স্কুল শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৩১ মার্চ, ২০২৫ এর মধ্যে এই নিয়ম প্রতিটি স্কুলে কার্যকর করা হবে। এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হল, ছাত্রদের শারীরিক এবং মানসিক উন্নতির জন্য পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করা, যাতে তারা পড়াশোনায় আরও ভালো করতে পারে।

নতুন বরাদ্দের মাধ্যমে রাজ্য সরকার শিক্ষার্থীদের পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি তাদের সামগ্রিক শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করতে চায়। শিক্ষকদের সংগঠন এবং অন্যান্য শিক্ষানুরাগী সংগঠন এই ব্যবস্থার সুফল দেখতে চায়।