বন্ধ স্কুল, জমি বেঁচে টাকার যোগান? মমতার প্রস্তাবে জোর জল্পনা!

টানাটানির সংসারে খরচ জোগাড়ে এবারে সম্পত্তি বিক্রির সিদ্ধান্ত মমতা (Mamata Banerjee) সরকারের। ক্রমবর্ধমান খরচ, সরকারের রাজ কোষে টান, পরিস্থিতি সামাল দিতে একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে…

Mamata Banerjee ordered TMC councilors and policemen to stop greed for hawkers ,

টানাটানির সংসারে খরচ জোগাড়ে এবারে সম্পত্তি বিক্রির সিদ্ধান্ত মমতা (Mamata Banerjee) সরকারের। ক্রমবর্ধমান খরচ, সরকারের রাজ কোষে টান, পরিস্থিতি সামাল দিতে একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। সুত্র মারফৎ পাওয়া খবর অনুযায়ী অন্যতম হলো বিভিন্ন অব্যবহৃত সরকারি সম্পত্তি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত। সূত্রের আরও খবর একাধিক স্কুল বাড়িও রয়েছে এর মধ্যে।(Mamata Banerjee)

মমতাকে টেক্কা দিতে সভাপতি পদে মহিলা মুখ আনছে বঙ্গ বিজেপি! দৌড়ে কারা?

   

সম্প্রতি নবান্নের সভাঘরে বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা, মুখ্যসচিবসহ একাধিক হাইপ্রোফাইল আধিকারিকদের সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী(Mamata Banerjee)। সেই বৈঠকে সরকারের আয় বাড়াতে সরকারের সম্পত্তি বিক্রি সম্পর্কে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রস্তাব অনুযায়ী বিভিন্ন অব্যবহৃত বা পরিত্যক্ত সরকারি বিল্ডিং ইতিমধ্যেই লিস্টেড করে ফেলা হয়েছে। সেগুলোকে এবার বিক্রি বা হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে। সূত্রের খবর এর মধ্যে একাধিক স্কুল বিল্ডিং এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পুরনো সরকারি দপ্তরের বাড়িও রয়েছে।

ইতিমধ্যেই বিভিন্ন লিজ হোল্ডে থাকা সরকারি সম্পত্তির ফ্রি করে সেগুলোকে বিক্রি বা হস্তান্তরের ঢালাও ছাড়পত্র দিয়ে রেখেছে পশ্চিমবঙ্গের সরকার। তার ওপর আবার নতুন করে পরিত্যক্ত সম্পত্তির লিস্ট বানানোর এই নির্দেশ সম্পত্তি বিক্রিরই পরিকল্পনা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। এছাড়াও ইতিমধ্যেই পথসাথী প্রকল্পে রাজ্যের বিভিন্ন হাইওয়ের পাশে প্রায় ৪১ টির উপরে বিল্ডিং তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। যেগুলি এই মুহূর্তে কোন কাজেই লাগছে না। আবার কর্মীতীর্থ প্রকল্পেও একাধিক এরকম বাড়ি তৈরি হয়েছে যা কার্যত অব্যবহৃত। সেই সমস্ত বিল্ডিংও হস্তান্তর বা বিক্রির পথে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

সেই হিসেবে রাজ্যের সবথেকে বেশি অব্যবহৃত জমি যদি থাকে তাহলে সেগুলো কোন স্কুল বা স্কুল সংলগ্ন জমি। সূত্রের খবর বছরখানেক আগে এই সমস্ত সম্পত্তি পিপিপি মডেলে বিক্রি করার একটা প্রস্তাবনা পাশ করেছিল সরকার। কিন্তু সেই সময় একাধিক সংবাদ মাধ্যমে এই বিষয়ে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর শোরগোল শুরু হয়। শোনা যায় সেই সময় এই প্রস্তাব থেকে পিছিয়ে আসে রাজ্য সরকার। কিন্তু এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) এই বিষয়ে জোরালো সওয়ালের পর গোটা বিষয়টির উপরে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।

অন্তর্ঘাতেই হার দেবাংশুর? তৃণমূলের রিপোর্টে জলঘোলা কোলাঘাটে!

এই মুহূর্তে দুশ্চিন্তা ঘনিয়েছে রাজ্যের শিক্ষা মহলেও। রাজ্যে প্রাথমিকে প্রায় ৪২০০ স্কুল এই মুহূর্তে বন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। অন্যান্য স্কুলের হিসেব ধরলে সেটা ৮০০০-এর গণ্ডি পেরিয়ে যাবে। এর মধ্যে পৌরসভা এলাকাতে কমবেশি ১৮৯ টি স্কুল কে আগেই বন্ধের নোটিশ ধরানো হয়েছে। তাহলে এবার সেই স্কুল বিল্ডিং গুলোরও কি বিক্রয় বা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হবে? এই নিয়ে এখন জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।

ভোটের আগেই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে ৫০০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে, ফল ঘোষণার পরপরই নতুন করে ৫০ হাজার বার্ধক্য ভাতা চালু করারও ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও একাধিক সরাসরি ফান্ড ট্রান্সফার প্রকল্প রয়েছে রাজ্য সরকারের। সে ক্ষেত্রে বারংবার বিভিন্ন দপ্তরের কেন্দ্র সরকারের অনুদান আটকে দেওয়ার অভিযোগ এনেছে রাজ্য সরকার। এবার সেই ঘাটতি পূরণ করবার জন্য ঘরের সম্পত্তি বেছে টাকা জোগাড় করার রাস্তাতেই হাঁটছে সরকার? বিশেষত নতুন স্কুল খোলার বদলে যদি বন্ধ স্কুল বিক্রি করে দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে কি শিক্ষার ব্যবস্থার উপরে আরও মারাত্মক কোনও প্রভাব পড়তে চলেছে? শিক্ষা মহলে যেমন একদিকে জল্পনা শুরু হয়েছে, সেরকমই রাজ্যের শাসক বিরোধী তরজাও শুরু হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী দিনে রাজ্য সরকার তার এই সম্পত্তি বিক্রির সিদ্ধান্তেই অনড় থাকে, নাকি আবারও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সেটাই এখন দেখার বিষয়।