পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের শান্ত থাকতে এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ানোর পরিবর্তে শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে অনুরোধ করেছেন। তাঁর এই আবেদনটি মালদহ জেলায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সম্প্রতি সংঘটিত উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার প্রেক্ষাপটে এসেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার মুর্শিদাবাদে এক সরকারি বণ্টন কর্মসূচিতে যোগ দেন এবং সেখানে সীমান্তবর্তী গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “কিছু রাজনৈতিক দল সীমান্তবর্তী এলাকায় বিভাজনমূলক রাজনীতি করছে এবং মানুষকে উসকানি দিচ্ছে, যাতে দুই দেশের জনগণের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি হয়। আমি সকলকে অনুরোধ করছি, উত্তেজিত হবেন না এবং সীমান্তের কাছে না যেতে। এতে শুধুমাত্র পরিস্থিতি জটিল হবে।”
যদিও মমতা বাংলাদেশ বা বিজেপির নাম নেননি, তবে তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল যে তিনি মালদহের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি অশান্তি নিয়ে কথা বলছিলেন। শনিবার, মালদহের সুখদেবপুরের গ্রামবাসীরা সীমান্তের কাছে যান এবং অভিযোগ করেন যে, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা তাঁদের জমিতে প্রবেশ করে ফসল লুটপাট করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলাদেশি গ্রামবাসীরা সীমান্তের ওপাশে জড়ো হয়ে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ করেন, যার ফলে কমপক্ষে চারজন গ্রামবাসী এবং দুই বিএসএফ জওয়ান আহত হন।
এই ঘটনার পর বিএসএফ এবং বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী পরস্পরকে সহযোগিতা করে। তবে, পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ থাকায় সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় কৃষকরা মাঠে যেতে পারেননি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বলেন, “বিএসএফ আমাদের সীমান্ত নিরাপদ রাখতে দায়ী। পাশাপাশি পুলিশকে জনসমক্ষে মাইকিং করতে বলা উচিত, যাতে গ্রামবাসীরা সীমান্তে জড়ো না হন এবং আইন হাতে না নেন।”
এছাড়া, বাংলাদেশে বিগত ঘটনাটি নিয়ে কথা বলেন লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি জানান, ঘটনাটি পরবর্তী সময়ে বিজিবির পক্ষ থেকে অ-লিথাল অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে দাঙ্গা পরিস্থিতি আরও বড় না হয়। তাঁরা এখন সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারগ্যাস কেনার পরিকল্পনা করছেন, যাতে পরিস্থিতি শান্ত রাখা যায়।
এমন পরিস্থিতিতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদন সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে শান্তি ও সমঝোতার বার্তা পৌঁছানোর চেষ্টা। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও উত্তেজনা, বিশেষ করে সীমান্তের কাছে, যে কোনো সময় বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।