বিল্ডিং রুলসে বড় পরিবর্তন, স্বপ্নের বাড়ি এখন হাতের নাগালে

রাজ্যের মানুষের মাথার উপর নিজের ছাদ—এ স্বপ্ন পূরণের পথে আরও এক বড় পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। সোমবার নবান্নে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের…

বিল্ডিং রুলসে বড় পরিবর্তন, স্বপ্নের বাড়ি এখন হাতের নাগালে

রাজ্যের মানুষের মাথার উপর নিজের ছাদ—এ স্বপ্ন পূরণের পথে আরও এক বড় পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। সোমবার নবান্নে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে নেওয়া হল এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এবার থেকে কলকাতার বুকে ছোট জমিতেও নিজের বাড়ি তৈরির অনুমোদন মিলবে।

বৈঠক শেষে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সংবাদমাধ্যমকে জানান, এতদিন পুরনো নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট আকারের চেয়ে ছোট জমিতে বাড়ি তৈরির অনুমতি দেওয়া হত না। ফলে অনেক নিম্নআয়ের পরিবারের স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে যেত। বিশেষ করে কলকাতার মতো জনবহুল শহরে যেখানে জমির দাম আকাশছোঁয়া, সেখানে গরিব মানুষের পক্ষে বড় জমি কেনা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছিল।

   

কি বদল এল নিয়মে?

পুরমন্ত্রী জানান, আগে অন্তত ৮০০–১০০০ স্কোয়ার ফুট জমি না হলে বাড়ি তৈরির নকশা অনুমোদিত হত না। এবার সেই নিয়মে বড় ছাড় দেওয়া হয়েছে। এখন ৫০০ স্কোয়ার ফুট জমিতেও নিজের বাড়ি তৈরির নকশা অনুমোদিত হবে। অর্থাৎ, শহরের গলিঘুঁজির ভেতর কিংবা পুরনো আবাসিক এলাকায় ছোট ছোট প্লট থাকা বহু মানুষের জন্য খুলে গেল নতুন দিগন্ত।

এ ছাড়াও, নকশা অনুমোদনের প্রক্রিয়াও সহজ করা হয়েছে। আগে দীর্ঘ সময় ধরে ফাইল পাস করাতে গিয়ে বহু মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হত। নতুন ব্যবস্থায় অনলাইনে আবেদন জানিয়ে দ্রুত অনুমোদন পাওয়া যাবে। এর ফলে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে।

কারা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন?

এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলি, যারা বহুদিন ধরে নিজের বাড়ি করার ইচ্ছা পোষণ করেও নিয়মের জটিলতায় পিছিয়ে পড়ছিলেন। ফিরহাদ হাকিমের ভাষায়, “এবার আর স্বপ্নে নয়, বাস্তবেই নিজেদের বাড়ি পাবেন কলকাতার গরিব মানুষ।”

Advertisements

শহরের বহু পুরনো বস্তি ও অর্ধপাকা বাড়িতে বসবাসকারী মানুষদের জন্যও এটি বড় সুযোগ। অনেকেই ছোট প্লট কিনে বা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমিতে বাড়ি করতে পারবেন। ফলে ভাড়া বাড়ির উপর নির্ভরতা কমবে।

রাজনৈতিক তাৎপর্য

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই সিদ্ধান্ত শুধু জনদরদী পদক্ষেপই নয়, বরং আগামী দিনের ভোট রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। শহরের গরিব ভোটারদের কাছে এই ঘোষণা বড় ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জমির আকার কমানোর পাশাপাশি নকশা অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করা সরকারের “প্রো-পিপল” ভাবমূর্তি আরও শক্ত করবে।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

রাজ্য সরকার জানিয়েছে, শুধু জমির আকারে ছাড় দেওয়া নয়, বরং বাড়ি নির্মাণে গুণমান বজায় রাখা এবং নিরাপত্তা মানদণ্ড মেনে চলাও বাধ্যতামূলক থাকবে। পুরসভা এ বিষয়ে বিশেষ নজরদারি করবে। একইসঙ্গে, আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য হোম লোন ও অন্যান্য সহায়ক প্রকল্পের সুযোগও দেওয়া হতে পারে।