মহিলা পুলিশকর্মীই নিগ্রহ বা পকসো ধারার অভিযোগ লিখবেন, নির্দেশ লালবাজারের

সম্প্রতি কলকাতার লালবাজারে পুলিশকর্মীদের (Kolkata Police) জন্য পকসো (POCSO) (পদানুষ্ঠান প্রতিরোধ এবং শিশু সুরক্ষা আইন) নিয়ে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এই…

Kolkata, Lalbazar

সম্প্রতি কলকাতার লালবাজারে পুলিশকর্মীদের (Kolkata Police) জন্য পকসো (POCSO) (পদানুষ্ঠান প্রতিরোধ এবং শিশু সুরক্ষা আইন) নিয়ে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এই কর্মশালায় পুলিশের সকল স্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে পকসো আইনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি ছিল, যৌন নির্যাতন এবং পকসো আইনের আওতায় মামলার অভিযোগ গ্রহণের প্রক্রিয়া এবং সংশ্লিষ্ট নিয়মাবলী।

কলকাতা মেট্রোর অরেঞ্জ লাইনের ১২৫ মিটার পথ তৈরির কাজ শেষ

   

পুলিশের কাজ শুধু আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা নয়, সমাজে শান্তি এবং নিরাপত্তা বজায় রাখাও। তবে, যখন বিষয়টি যৌন নির্যাতন বা শিশুদের প্রতি অন্যায় আচরণের হয়, তখন আরও সতর্কতা প্রয়োজন। পকসো আইনের অধীনে, এমন মামলাগুলিতে অত্যন্ত যত্ন ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করা প্রয়োজন। এই আইনটি বিশেষভাবে শিশুদের সুরক্ষা এবং তাদের অধিকার রক্ষায় গঠন করা হয়েছে, যেখানে কোনো শিশুর ওপর যৌন নির্যাতন করা হলে তা একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়।

কর্মশালার এক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ছিল, যে সমস্ত অভিযোগ যৌন নির্যাতন কিংবা পকসো আইনের আওতায় পড়ে, সেই অভিযোগগুলি মহিলা পুলিশ অফিসারের কাছ থেকে নথিভুক্ত করতে হবে। আইনগতভাবে, অভিযোগকারীর জবানবন্দি, বিশেষ করে যদি তা কোনও তরুণী কিংবা নাবালিকার হয়, তা নিতে হবে মহিলা পুলিশকর্মীদের মাধ্যমে। কারণ, এই ধরনের ঘটনা একটি অত্যন্ত ব্যক্তিগত এবং সংবেদনশীল বিষয়, যেখানে মহিলার প্রতি সহানুভূতির প্রয়োজন এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে তত্ত্বাবধানে থাকা জরুরি।

ফের ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের নামে বদল, চিকিৎসকের পরিবর্তে বসবে প্রয়াত ফুটবলারের নাম

এছাড়া, থানায় যদি কোনও মহিলা পুলিশকর্মী উপস্থিত না থাকে, তাহলে আইন অনুযায়ী অন্য থানার মহিলা পুলিশ অফিসার কিংবা কর্মীকে ডেকে এনে অভিযোগ গ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, কেউ যেন তার অভিযোগ জানাতে গিয়ে কোন ধরনের মানসিক অস্বস্তির শিকার না হন। মহিলাদের প্রতি অত্যাচার বা নির্যাতনের ঘটনার ক্ষেত্রে, তাদের প্রতি সহানুভূতি এবং সম্মান প্রদর্শন করা, সমাজের শৃঙ্খলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

লালবাজারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ধরনের প্রশিক্ষণ এবং কর্মশালা নিয়মিতভাবে পুলিশের সদস্যদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে এবং তাদের দক্ষতা বাড়াতে আয়োজন করা হবে। এর মাধ্যমে পুলিশ বাহিনী শিশুদের সুরক্ষা এবং নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে।

ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগে ‘সুপ্রিম’ শরণের পরিকল্পনা ইন্ডি জোটের

পকসো আইনের অধীনে পুলিশের কার্যক্রম শুধু আইনগত নথি তৈরি করেই থেমে থাকে না, বরং, এর মাধ্যমে সমাজে নারীর নিরাপত্তা এবং শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়। যেকোনো প্রকার যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া শিশুর প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন এবং তাদের পক্ষে দাঁড়ানো, পুলিশের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তাই, এই ধরনের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পুলিশ কর্মকর্তারা আরও সুসজ্জিত হয়ে উঠবেন, যাতে তারা সঠিকভাবে এবং দ্রুততার সাথে নির্যাতিতদের সহায়তা করতে পারে।

অবশেষে, এ ধরনের উদ্যোগের ফলে আমাদের সমাজে এক নতুন ধরনের সচেতনতা এবং সহানুভূতির সৃষ্টি হবে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা যখন পকসো আইনের গুরুত্ব এবং তার সঠিক প্রয়োগ সম্পর্কে সচেতন হবেন, তখন শুধুমাত্র আইনি সহায়তা নয়, বরং মানবিক মূল্যবোধের চর্চাও সমানভাবে বৃদ্ধি পাবে।