TMC: কসবায় তৃণমূল কাউন্সিলরের ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় চাঞ্চল্য

কলকাতার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার ঘটনায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত যুবরাজ সিংহ জানিয়েছেন, তাঁর দায়িত্ব খুনের ছিল না,…

Kasba TMc counciller attack

short-samachar

কলকাতার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার ঘটনায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত যুবরাজ সিংহ জানিয়েছেন, তাঁর দায়িত্ব খুনের ছিল না, বরং কাউন্সিলরকে ভয় দেখানো। তাঁর এই বক্তব্যে ঘটনার পেছনের ষড়যন্ত্র (Attack on TMC counciller) নিয়ে নতুন করে সন্দেহ দানা বাঁধছে।  

   

সিআইডি রাশিয়ান রাসায়নিক স্প্রে করেছে, সেই সন্দেহে চিকিৎসকের কাছে অর্জুন

গত সপ্তাহে সুশান্ত ঘোষের বাড়ির সামনে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে, এই হামলার নেতৃত্বে ছিলেন যুবরাজ সিংহ। হামলার পরপরই পুলিশ তাঁকে আটক করে এবং বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।

যুবরাজ পুলিশকে জানান, তাঁর সঙ্গে আরও দু’জন ব্যক্তি ছিলেন, যাঁদের পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তাঁদের মূল উদ্দেশ্য ছিল কাউন্সিলরকে ভয় দেখানো। এই কাজের পেছনে কার নির্দেশ ছিল বা কী উদ্দেশ্য, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।

১০৮ নম্বর ওয়ার্ড রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত হলেও, সম্প্রতি এলাকায় কিছু বিরোধী গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে তাঁকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। 

মেডিক্যাল কলেজের শিশু ওয়ার্ডে ভয়াবহ আগুনে ১০ নবজাতকের মৃত্যু

যুবরাজের এই জবানবন্দি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে, পুলিশ এই মুহূর্তে কোনো রাজনৈতিক দলের নাম বা জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।

তদন্তকারী দলের এক কর্মকর্তা জানান, “যুবরাজের বক্তব্য তদন্তের অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কিন্তু তাঁর দাবি কতটা সত্য, তা যাচাই করা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। ফোন কল রেকর্ড, আর্থিক লেনদেন ও অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে পুরো চিত্র পরিষ্কার হবে।”

এলাকাবাসীর মধ্যে হামলার পর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সুশান্ত ঘোষের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশি টহল আরও বাড়ানো উচিত।

যুবরাজের বক্তব্য অনুযায়ী, যাঁরা এই ঘটনার পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করা এখন পুলিশের প্রধান লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই কয়েকজন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।

তবে এই ঘটনার মাধ্যমে যে বার্তা দিতে চাওয়া হয়েছিল, তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাউন্সিলরকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছিল নাকি এর পেছনে ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা কাজ করেছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

২০২৫ সালেই অর্থনীতিতে জাপানকে ছাড়িয়ে যাবে ভারত, রিপোর্ট Japan Times’র

তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। অন্যদিকে, বিরোধীরা এই ঘটনাকে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব হিসেবে উল্লেখ করে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

এখন, পুরো ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করা এবং তাঁদের উদ্দেশ্য প্রকাশ্যে আনা পুলিশের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। সুশান্ত ঘোষের মতো জনপ্রতিনিধিদের ওপর হামলা এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে। যুবরাজের বক্তব্য সঠিক হলে, এই ঘটনার পেছনে আরও বড় চক্রান্ত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।