কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার কসবা (Kasba Rape Case) এলাকার আইন কলেজে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীর উপর সংঘটিত গণধর্ষণ কাণ্ডের তদন্তে এবার বড় পদক্ষেপ নিল কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যেই নির্যাতিতা এবং তিনজন ধৃত অভিযুক্তের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এই নমুনা পরীক্ষা করেই মিল খুঁজতে চাইছে পুলিশ।
ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ, তদন্তে নতুন দিশা
সূত্রের খবর, ধৃত মনোজিৎ মিশ্র, জ়ইব আহমেদ এবং প্রমিত মুখোপাধ্যায়ের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্যাতিতার নমুনাও সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। পুলিশের লক্ষ্য, অভিযুক্তদের সঙ্গে নির্যাতিতার শরীরে পাওয়া নমুনার কোনও মিল রয়েছে কিনা, তা দ্রুত যাচাই করা।
ফরেনসিক পরীক্ষার গুরুত্ব
পুলিশ সূত্রের মতে, এই ডিএনএ রিপোর্ট-ই হতে পারে মামলার ভবিষ্যৎ প্রমাণের বড় ভিত্তি। অভিযোগকারিণীর বয়ান, কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ এবং ফরেনসিক নমুনা— সব কিছুর সঙ্গে মিলিয়ে অপরাধের প্রমাণ আরও জোরদার করতে চাইছে তদন্তকারী দল।
সিট তদন্তে নেমেছে
লালবাজারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করা হয়েছে। একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের এই দল প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযুক্তদের একাধিকবার জেরা করা হয়েছে। ঘটনার দিন কলেজের (Kasba Rape Case) ভিতরে ও আশপাশে কে কোথায় ছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে।
সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে
পুলিশ ইতিমধ্যেই প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ওই ফুটেজে কী কী ঘটেছে, কারা কোথায় ছিল, নির্যাতিতাকে কীভাবে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে— সব খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল।
ঘটনাস্থলে ফরেনসিক নমুনা
পাশাপাশি কলেজের গার্ড রুম এবং ইউনিয়ন রুম থেকে একাধিক ফরেনসিক নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ছেঁড়া চুল, খালি বোতল, হকি স্টিক ও লোহার রড। তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন, এই জিনিসগুলিই ঘটনার সময় ব্যবহার করা হয়েছিল।
নিরাপত্তারক্ষীও গ্রেফতার
প্রসঙ্গত, কলেজের নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, ঘটনার সময় সব দেখেও তিনি নির্যাতিতাকে সাহায্য করেননি। তাঁর বয়ানেও মিলেছে একাধিক অসঙ্গতি।
প্রশাসনের কড়া নজর
এই ঘটনার পরই কলেজ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা দপ্তরও কলেজ কর্তৃপক্ষের থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, “এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে প্রশাসন এবং শিক্ষা দপ্তর একসঙ্গে কাজ করছে।”
ডিএনএ রিপোর্টের অপেক্ষা
সব মিলিয়ে এখন তদন্তকারীদের অপেক্ষা ডিএনএ রিপোর্টের। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই রিপোর্ট মামলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রিপোর্ট হাতে পেলেই চার্জশিট তৈরির কাজ আরও দ্রুত শুরু করা যাবে।’’