কসবা ধর্ষণ কাণ্ডে শাসক দলের ছত্রছায়ায় অপরাধীদের দাদাগিরির অভিযোগ

কলকাতা: কসবা আইন কলেজে (Kasba Law College) ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে বারবার অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনিক নীরবতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এবার এই…

কসবা ধর্ষণ কাণ্ডে শাসক দলের ছত্রছায়ায় অপরাধীদের দাদাগিরির অভিযোগ

কলকাতা: কসবা আইন কলেজে (Kasba Law College) ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে বারবার অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনিক নীরবতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এবার এই ইস্যুতে মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গ কলেজ প্রিন্সিপাল কাউন্সিলের প্রাক্তন সভাপতি পূর্ণচন্দ্র মাইতি।

তিনি স্পষ্টভাবে অভিযোগ করেছেন, “অপরাধীরা জানে শাসক দলের ছত্রছায়ায় থাকলে তাদের কোনও অসুবিধা হবে না। তাই এমন ঘটনা একের পর এক ঘটে চলেছে।”

   

শুধু কসবা কলেজ (Kasba Law College) নয়, কিছুদিন আগেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনাতেও ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। এবার সেই বিতর্ক ফের উসকে দিয়েছে কসবা আইন কলেজ ধর্ষণ কাণ্ড।

পূর্ণচন্দ্র মাইতির অভিযোগ, “রাজ্যের কলেজগুলিতে বর্তমানে দাদাগিরি সংস্কৃতি চালু হয়েছে। প্রিন্সিপালদের চাপে রাখা হয়। কোনও নিয়ম নেই, নীতি নেই। শুধু উপরের নির্দেশ মেনে চলতে হয়।” তিনি আরও বলেন, “প্রিন্সিপালরা যদি প্রতিবাদ করেন বা অনিয়মের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন, তাহলে তাঁদের গলাকাটা যায়! এক মিনিটে বদলি করে দেওয়া হয়। প্রশাসন এসব দেখেও কিছু করে না।”

কসবা আইন কলেজ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পরিচিত মুখ। টিএমসিপি নেতৃত্বও তাঁর নাম অস্বীকার করেনি। অভিযোগ, কলেজে সে বহুদিন ধরেই দাদাগিরি চালাত। এমনকি, ছাত্রদের মারধর করা এবং গুন্ডা দিয়ে ভয় দেখানোর একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

শিক্ষামহল মনে করছে, এতদিন ধরে এই ধরণের আচরণ চললেও কলেজ প্রশাসন কিংবা উচ্চশিক্ষা দফতর কোনও কড়া পদক্ষেপ নেয়নি। প্রশ্ন উঠছে, কেন এতদিন কলেজে এই দাদাগিরি চলেছে?

পূর্ণচন্দ্র মাইতির আরও মন্তব্য, “এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি দায়ী রাজ্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। যতদিন প্রশাসন এবং শিক্ষা দফতর দলীয় নির্দেশে চলবে, ততদিন শিক্ষাঙ্গনে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়।”

Advertisements

মেডিক্যাল রিপোর্টে ইতিমধ্যেই নির্যাতিতার শরীরে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। অভিযুক্ত মনোজিৎ এবং তার দুই সঙ্গী পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তদন্তে একের পর এক নতুন তথ্য উঠে আসছে।

তবে শিক্ষাক্ষেত্রে এই ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা রুখতে প্রশাসন আদৌ কড়া ব্যবস্থা নেয় কি না, তা এখন দেখার বিষয়। শিক্ষা মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও এই ঘটনার ন্যায়বিচার এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন।

অনেকের মতে, এই ঘটনা শুধুমাত্র কসবা কলেজের বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। রাজ্যের বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই ধরনের দাদাগিরি, ভয়ভীতি, এবং রাজনৈতিক রং লাগানো অপরাধের পরিবেশ গড়ে উঠেছে।

পূর্ণচন্দ্র মাইতির কথায়, “এখনই যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে সারা রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য আরও বাড়বে।”

শিক্ষামহল ও সাধারণ মানুষ চান, এবার যেন দোষীরা কোনওভাবে আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে।