১৯ বছর আগে এরম আগস্ট মাসেই স্বাধীনতা দিবসে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয়েছিল ‘ধর্ষক’ ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে। সেই মৃত্যুদণ্ড নিয়ে আজও বিতর্ক রয়েছে। ধনঞ্জয়ের পরিবারের প্রতি সমব্যথীরা পুরো বিষয়টির জন্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তার স্ত্রী মীরাদেবীর প্রভাবকে দায়ী করেন। সেই ঘটনাকে টেনে নাম না করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিশানা করলেন (Kabir Suman) কবীর সুমন। ফেসবুকে পোস্ট করা কবিতায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যু কামনা করা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। এই পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
প্রসঙ্গত, শ্বাসকষ্ট নিয়ে শনিবার আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আপাতত কিছুটা সুস্থ তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছেন। দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। রাজ্যের শাসকদল ঘনিষ্ঠ শিল্পী কবীর সুমনের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে তুমুল আলোড়ন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা কবিতায় ধনঞ্জয়ের ফাঁসির প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন সুমন। তার অভিযোগ, ‘গরিব বাঙালি’ যুবককে স্রেফ পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয়েছে। সেই কাজে ‘দোষী’ ছিলেন ‘মীরাবাঈ’। উল্লেখ্য, ধর্ষণ কাণ্ডে ধনঞ্জয়কে শাস্তি দিতে সেই সময় পথে নেমেছিলেন বুদ্ধবাবুর স্ত্রী তথা সমাজকর্মী মীরা ভট্টাচার্য। নাম না করে এদিন সেই খোঁচাই দিয়েছেন শিল্পী।
উল্লেখ্য, সুমনের লেখায় উঠে এসেছে নন্দীগ্রাম, হাজরা মোড়ে তৎকালীন কংগ্রেস যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নৃশংস মারধরের কথাও। নার্সিংহোমের বিছানায় শুয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কি সেই সমস্ত স্মৃতি মনে পড়ছে? সেই নিয়ে প্রশ্ন করেছেন তিনি।
তিনি আরও বলেছেন, সেই মমতার নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে সরকারি সম্মান ও গান স্যালুট দেবে বুঝেই আজ তাকে দেখে হাত নাড়াচ্ছেন বুদ্ধবাবু। সেই কথা কবীর সুমনের লেখায় উঠে এসেছে। পরপর পোস্ট করা তিনটি কবিতাতেই বুদ্ধবাবুর মৃত্যু কামনা করেছেন শিল্পী কবীর সুমন।
ফেসবুক পোস্টে কবীর সুমন লিখেছেন,
♠
ধনঞ্জয়ের গান – ৩
______
এই তো, প্রভু, গার্সিয়া মার্কেস
এক শ’ বছর শুধু নি:সঙ্গতা
অবশেষে আজ মনে পড়ছে কি, প্রভু,
অসহায় এক ধনঞ্জয়ের কথা
গরীব বাঙালি গেঁয়ো পুরুতের ছেলে
আপনার মতো চোখা মার্ক্সিস্ট নয়
নেহাতই বোকাটে নেহাতই সে এলেবেলে
নিরীহ বেচারা একলা ধনঞ্জয়
পাবলো নেরুদা কবি না দোকানদার
জানত না সেই গেঁয়ো বাংলার ছেলে
সুকান্ত তার কেউ ছিলেন না, প্রভু,
উঠতে পারেনি “অগ্রগতির মেলে”
কমরেড বলে কেউ তাকে ডাকত না
রেড দেখে তার হয়ত লাগত ভয়
দেখলেই হবে খরচা তো আছে, প্রভু,
জানত বাংলা গাঁয়ের ধনঞ্জয়
সে যে নির্দোষ প্রভু জানতেন ভাল
জানত সবাই যাদের জানার কথা
তাও প্রভু তাকে ফাঁসুড়ের হাতে তুলে
কারা খুঁজলেন বিচারের অমরতা
আপনি এখন দ্বন্দ্বমূলক খাটে
নার্সিং হোমে বুর্জোয়া বিছানায়
ধনঞ্জয়ের খোয়াব স্মৃতির মাঠে
কমরেড প্রভু আপনারও বেলা যায়
♠