নিউজ ডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপির সিনিয়র নেতা কাবিন্দর গুপ্ত। কবিন্দর জেলা উন্নয়ন পরিষদের (District Development Council) গত নভেম্বরের নির্বাচনে কাশ্মীরের বিতর্কিত রোশনি আইনের অধীনে রাষ্ট্রীয় জমি (এখন বাতিল) দখলকে ‘ভূমি জিহাদ’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। এবার তাঁর বিরুদ্ধেই অবৈধভাবে সরকারি জমি দখল করার অভিযোগ উঠল। ২০১০ থেকে ২০১৭, মোট সাত বছর রাষ্ট্রীয় ভূমির অবৈধ দখলদার ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন শিল্পেই বিপ্লব: তালিবানদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে কাবুলের গ্রাফিতি শিল্পী শামসিয়া হাসানি
ভালওয়াল তহসিলদারের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, অ্যাডভোকেট শেখ শাকিলের দায়ের করা একটি আরটিআই আবেদন থেকে কাবিন্দরের অবৈধভাবে জমি দখল করার ঘটনা সামনে এসেছে। কাবিন্দর গুপ্ত সহ আরও দুজন, সুভাষ শর্মা এবং শিব রতন গুপ্ত, যৌথভাবে খসড়া নং ১৭৮৯ দখল করেছেন। জমিটির মোট আয়তন ২৩ ক্যানাল, ৯ মারলা (৮ ক্যানাল = ১ একর, ১ মারলা = ২৭০ বর্গফুট)। জম্মু জেলার ভালওয়াল তহসিলের ঘাঁক গ্রামে (Ghaink) ২০১০ সাল থেকে জমিটি দখল করেছেন তাঁরা।
সুভাষ শর্মা জম্মু পৌর কর্পোরেশনের জানিপুরের ইন্দ্র কলোনির প্রতিনিধি। শিব রতন গুপ্ত ইন্দ্র কলোনির বাসিন্দা। কাবিন্দর গুপ্ত এবং সুভাষ শর্মা দুজনেই ঘাঁক গ্রামে (Ghaink) সরকারি জমি দখল করার কথা অস্বীকার করেছেন। কাবিন্দর গুপ্ত বলেন,”আমি আমার বাবা-মায়ের নামে শপথ করে বলছি যে আমি কোনও অবৈধকাজ করিনি। আমি জানি না কিভাবে আমার নামে ঘাঁকে ২৩ ক্যানাল, ৯ মারলা জমি দখল হয়েছে।”
২০১০ সালে, যখন খসড়া গিরিদোয়ারি’তে (রাজস্ব বিভাগের নথি যাতে জমি এবং ফসলের বিবরণ থাকে) তাদের নামে জমি অ্যালোট করানো হয়, তখন জম্মু-কাশ্মীরে ন্যাশনাল কনফারেন্স-কংগ্রেস জোট সরকার ছিল। সেসময় কাবিন্দর গুপ্ত ছিলেন জম্মু পৌর কর্পোরেশনের মেয়র। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এস কে ভাল্লার অ্যাডভোকেট শেখ শাকিলের দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলায় জমির মালিকানা বাতিলের নির্দেশ দেয় আদালত। কাবিন্দর গুপ্ত তখন ছিলেন জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার স্পিকার।
আরও পড়ুন তালিবানদের নিয়ে কাশ্মীর দখলের হুমকি হিজবুল মুজাহিদিন প্রধানের
ভালওয়াল তহসিলদার অমিত উপাধ্যায় এবং ঝাঁক পাটোয়ারী মোহাম্মদ আসলাম জানান, ‘২০১০ সালে কাবিন্দর গুপ্ত এবং অন্য দুজনের নামে রাজ্য জমির রাজস্ব এন্ট্রি কীভাবে হয়েছে তা সম্পর্কে তারা বিশদে জানেন না। যদিও রাষ্ট্রীয় জমির ব্যাপারে খসড়া গিরিদোয়ারিতে কারো নামেই করা যাবে না যতক্ষণ না কেউ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দেখায় যে জমি তাঁর দখলে রয়েছে। এবং সে বিষয়ে প্রমাণ দেখান।’
জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য জমি (মালিকদের মালিকানা যাচাই) আইনটি ২০০১ সালে ফারুক আবদুল্লাহর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল কনফারেন্স সরকার এনেছিল। যদিও ২০২০ সালের নভেম্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছিলেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ রোশনি আইনের সুবিধাভোগীদের মধ্যে ছিলেন। এবার সেই তালিকাতেই নতুন সংযোজন বিজেপি নেতা কাবিন্দর গুপ্ত।