Mamata Banerjee: কোষাগারের ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’ দশা! অথচ মমতার মিটিংয়ে ৬০ লাখ খরচ কর্পোরেশনের?

সম্প্রতি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো উপলক্ষে বিশেষ বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। সেই বৈঠকে কলকাতা সহ জেলার বিভিন্ন নামী পুজো কমিটির কর্মকর্তারা যেমন ছিলেন, তেমনই…

সম্প্রতি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো উপলক্ষে বিশেষ বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। সেই বৈঠকে কলকাতা সহ জেলার বিভিন্ন নামী পুজো কমিটির কর্মকর্তারা যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন একাধিক হেভিওয়েট মন্ত্রী থেকে শুরু করে পুলিশ -প্রশাসনের আধিকারিকরা। এদের মধ্যে আবার বেশ কিছু মন্ত্রী সরাসরি বিভিন্ন পুজো কমিটির সাথেও যুক্ত। ফলে সব মিলিয়ে রীতিমত ভিভিআইপি বৈঠকই বলা যেতে পারে একে।

আর সেই বৈঠকের খরচের বহর শুনলে রীতিমতো তাক লেগে যেতে পারে। সূত্রের খবর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কয়েক ঘণ্টার পুজোর মিটিংয়ে খরচ হয়েছে ৬০ লাখ টাকা। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মঞ্চসজ্জা, অন্যান্য ডেকরেশনের কাজ এবং অতিথিদের জলখাবারের জন্যই নাকি এই খরচ। কিন্তু আরও অবাক করার মত বিষয় রয়েছে। প্রশাসনিক বৈঠক হলেও এই বৈঠকের খরচের ভার বহন করতে হচ্ছে কলকাতা পুরসভাকেই।

   

এমনিতেই গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা পুরসভার রাজস্ব আদায়ের অবস্থা বেশ খারাপই বলা যেতে পারে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পত্তিকর আদায়ের জন্য ছাড়ের স্কিমও ঘোষণা করেছে কর্পোরেশন। কিন্তু তা সত্ত্বেও আর্থিক অবস্থার খুব একটা হাল ফেরেনি। পরিস্থিতি এমন যে বহু ঠিকাদার ঠিকঠাক মতো তাদের বকেয়া টাকা পাচ্ছেন না। অনেকে তাই কাজ করতেই এখন অস্বীকার করছেন।

অপরদিকে অভিযোগ যে, গত সাত মাস ধরে পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা তাদের ভাতা ঠিকঠাক পাচ্ছেন না। এরকম অবস্থাতে কলকাতা পুলিশের এই পুজোর মিটিং-এর খরচা বহনের জন্য দেওয়া চিঠিতে ক্ষুব্ধ পুরসভার কর্মী এবং আধিকারিকদের একাংশ। পুরসভার সূত্রে খবর ২০১২ সাল থেকেই এই মিটিংয়ের খরচ বহন করতে হচ্ছে কলকাতা পুরসভাকে। ২০২২ সালে খরচের অঙ্কটা ছিল ৫০ লাখ মতো। ২০২৩ থেকেই তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ লাখ এর কাছাকাছি।

Durga Puja 2024: রাজনীতি ভুলে পুজোর ভিড় টানার লড়াইয়ে সুজিত-সজল? রাতারাতি নোটিস পুলিশের

এর আগে স্বরাষ্ট্র দপ্তরকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ মেটাবার জন্য একাধিক চিঠিও নাকি লিখেছে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু তার কোন প্রত্যুত্তর নাকি আজও আসেনি। বদলে আবারও খরচ বহন করার চিঠি এসেছে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে, এমনটাই দাবি পুরসভার একাংশের। গোটা খরচটাই পুরসভার রাজস্ব দপ্তরের বরাদ্দ থেকে করা হয়। অথচ রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কার্যত ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’ দশা কলকাতা কর্পোরেশনের।

এর আগে দীর্ঘদিন এই অনুষ্ঠানের খাওয়ার সরবরাহকারী ক্যাটারিং সংস্থার বকেয়া বাকি ছিল। যদিও পরবর্তীকালে পুরো টাকাটাই শোধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু বকেয়া থাকা নিয়ে আপত্তি করায় এবছর আর সেই সংস্থার কপালে ক্যাটারিং এর বরাত জোটেনি। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, অনুষ্ঠানে লাইট সাউন্ড কিংবা মঞ্চ সাজানোর সংস্থাদেরও অভিজ্ঞতা যে খুব একটা সুখকর নয়।

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, খোদ মেয়রও নাকি গোটা ঘটনায় ঘনিষ্ঠমহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যদিও প্রকাশ্যে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। সূত্রের খবর গত বছর তাঁরই নির্দেশে অনুষ্ঠানের খরচের টাকা চেয়ে চিঠি গিয়েছিল নবান্নে। যদিও তার কোন উত্তর আসেনি বলেই খবর। আশা না ছেড়ে এবারও কী তাহলে পুরসভা চিঠি পাঠাবে নবান্নে? সম্ভাবনা যথেষ্ট জোরালো বলে মনে করছেন পুর-আধিকারিকদের একাংশ