বসন্তের শুরুতেই বদলে গিয়েছে আবহাওয়া। পশ্চিম বর্ধমানে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে, যা আগামী রবিবার পর্যন্ত চলতে পারে। সকাল থেকেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে এবং এর ফলে ঠাণ্ডার প্রকোপও আবার বাড়তে শুরু করেছে। শুধু পশ্চিম বর্ধমান নয়, রাজ্যের একাধিক জেলায় এই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যার প্রভাব কৃষি খাতে ব্যাপকভাবে পড়তে পারে।
এই সময়ের বৃষ্টি মূলত পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব বর্ধমান সহ আরও বেশ কিছু জেলাতে হচ্ছে। আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে আগাম সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল যে, বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পাশাপাশি ঝড়-বৃষ্টি এবং শিলা বৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে। বিশেষত রবি শস্যের ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কৃষি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আলু চাষে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ অতিরিক্ত জল জমে থাকা মাটিতে আলু তোলা ও সংরক্ষণে সমস্যা হতে পারে।
বসন্তের এই বৃষ্টির প্রভাব শুধু পশ্চিম বর্ধমানেই নয়, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে তেলেঙ্গানা পর্যন্ত একটি অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে, যার কারণে সক্রিয় ঘূর্ণাবর্তও দেখা যাচ্ছে। ফলে ঝোড়ো হাওয়া এবং বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি চলতে থাকবে আগামী কয়েকদিন। বিশেষ করে আজ, বৃহস্পতিবার এবং শনিবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে যে, এসব জেলায় ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো বাতাস বইতে পারে।
এছাড়া, দার্জিলিংয়ের পার্বত্য অঞ্চলে একটানা বৃষ্টি এবং তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। শনি ও রবিবার উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জেলায় আগামীকাল, শুক্রবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি এবং ঝোড়ো বাতাসের আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ আরও কিছু জেলায় ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো বাতাস বইবে।
এর পাশাপাশি, শনি এবং রবিবার পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি, নদিয়া সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝোড়ো বাতাস বইবে। আবহাওয়া দপ্তর আরো জানিয়েছে, ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে বাতাসের সাথে শিলা বৃষ্টিও হতে পারে।
এই আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষত, রবি শস্যের কৃষকরা ভয় পাচ্ছেন যে এই বৃষ্টি তাদের মাঠের শস্যকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আলু, সরষে এবং অন্যান্য শস্যের জন্য এই বৃষ্টি ক্ষতির কারণ হতে পারে, যা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বড় সংকট সৃষ্টি করবে।
অতএব, কৃষি বিভাগ ও আবহাওয়া দপ্তর কৃষকদেরকে সতর্ক থাকতে বলেছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে। এই বিপদজনক আবহাওয়ার মধ্যেও কৃষকরা যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেন, তবে তাদের কৃষিক্ষেত্রে বিপুল ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।