কলকাতায় রাতভর বৃষ্টিতে ভেঙে পড়ল দুটি বাড়ি

শুক্রবার ভোর থেকে একটানা বৃষ্টিতে আবারও বিপাকে পড়ল কলকাতাবাসী (Rain in Kolkata)। প্রবল বর্ষণের জেরে শহরের একাধিক পুরনো বাড়ির অবস্থা ভয়াবহ রূপ নেয়। তার মধ্যে…

কলকাতায় রাতভর বৃষ্টিতে ভেঙে পড়ল দুটি বাড়ি

শুক্রবার ভোর থেকে একটানা বৃষ্টিতে আবারও বিপাকে পড়ল কলকাতাবাসী (Rain in Kolkata)। প্রবল বর্ষণের জেরে শহরের একাধিক পুরনো বাড়ির অবস্থা ভয়াবহ রূপ নেয়। তার মধ্যে গিরিশ পার্ক ও বউবাজার এলাকায় দুটি পুরনো বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। সৌভাগ্যবশত এই দুই ঘটনায় কোনও প্রাণহানি বা আহত হওয়ার খবর মেলেনি, তবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।

বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জল জমে যায়। শুক্রবার সকালে বউবাজারের একটি পুরনো বাড়ির একাংশ আচমকাই ভেঙে পড়ে, এবং সেটি সোজা গিয়ে পড়ে ফুটপাথে থাকা একটি ছোট দোকানের উপর। যদিও দোকানটির ক্ষতি হয়েছে, তবুও দোকান মালিক সহ আশপাশের কেউ আহত হননি, যা বড়সড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া বলেই মনে করছেন বাসিন্দারা।

   

অন্যদিকে, গিরিশ পার্কের একটি পুরনো বাড়ি যা আগে থেকেই বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত ছিল, তার একাংশও ভেঙে পড়ে। যদিও ওই সময় কেউ বাড়ির সেই অংশে ছিলেন না, ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের তরফে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়ির আশপাশ ঘিরে দেওয়া হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হয়েছে।

এদিকে, প্রবল বৃষ্টিতে কলকাতা শহরের ফোর্ট উইলিয়াম সংলগ্ন ময়দানের কাছে একটি বড় গাছ উপড়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটার পরপরই কলকাতা পুলিশের একটি দল দ্রুততার সঙ্গে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ শুরু করে দেয়, ফলে কোনও যানজট সৃষ্টি হয়নি। এতে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের জন্য বাহবা জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

অন্যদিকে শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় জমে যায় জল। পার্ক সার্কাস, একবালপুর, টালিগঞ্জ, সিএইচসি মোড়, বেলগাছিয়া, নিমতা সহ একাধিক অঞ্চলে জল জমে জনজীবনে ব্যাঘাত ঘটায়। কলকাতা পুরসভার তরফে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাম্প বসিয়ে জল বের করার কাজ শুরু হয়েছে। অনেক জায়গাতেই জল নামতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

Advertisements

বৃষ্টির পরিমাণ ও প্রভাব বিবেচনায় রাখলে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত। তবে প্রশাসনের তৎপরতা ও পুলিশের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ায় বড়সড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গে, বিশেষ করে কলকাতা, হাওড়া ও হুগলি জেলায়। ফলে প্রশাসনের তরফে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। পুরসভার কর্মীদের ছুটি বাতিল করে ঘূর্ণায়মান ডিউটি চালু রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে শহরবাসীর আশঙ্কা, আরও বৃষ্টি হলে পুরনো ও জীর্ণ বাড়িগুলিতে বড়সড় বিপদ ঘটতে পারে। তাই অনেক এলাকায় বাসিন্দারা নিজেরাই বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। পুরসভা থেকে এমন ঝুঁকিপূর্ণ বাড়িগুলি চিহ্নিত করে সতর্কতামূলক নোটিশ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

সার্বিকভাবে বলা যায়, কলকাতার বর্ষা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসন সক্রিয় হলেও পরিকাঠামোগত ঘাটতি ও পুরনো বাড়িগুলির দুরবস্থা এখনও বড় চিন্তার বিষয়। একটানা বৃষ্টি চললে শহরবাসীকে আরও সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।