নিউজ ডেস্ক: জীবন বাঁচাতে দেশত্যাগ! তবে মানুষের মতো তো নয়, অবলা রুপোলি ইলিশের কাছে সীমান্ত কী করবে। গঙ্গা মোহনার দূষণের চোটে ঝাঁপ ঝাঁক ইলিশ (hilsa) এখন বাংলাদেশের দিকে মুখ ঘুরিয়েছে। জলেই তাদের মোলাকাত হবে পদ্মার ইলিশের সঙ্গে!
সাউথ এশিয়া নেটওয়ার্ক অব ড্যাম রিভার অ্যান্ড পিপলস সম্প্রতি একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। এতে গঙ্গায় ইলিশের দেখা না পাওয়ার কারণ হিসেবে দূষণকেই অধিক মাত্রায় চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গঙ্গা থেকে অচিরেই উধাও হতে চলেছে ইলিশের বড় অংশ।
উৎস থেকে মোহনা বরাবর গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার যে নমামি গঙ্গে পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার তা কার্যত প্রধানমন্ত্রীর সংসদীয় কেন্দ্র বারাণসীতেই তেমন কাজে আসেনি। উৎস অর্থাৎ উত্তরাখণ্ডের কিছু অংশ বাদ দিলে গঙ্গা দূষণ উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গে ভয়াবহ। পরিস্থিতি এমনই যে গঙ্গার সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় দূষণ উদ্বেগজনক।
সেই কারণেই । গঙ্গা নদীর মোহনায় ইলিশের দেখা মিলছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, গঙ্গায় দূষণের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ইলিশ। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশের অভিমুখ এখন বাংলাদেশের দিকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গা নদীর তীর বরাবর শতাধিক পুরসভার আবর্জনা ও কলকারখানার বর্জ্যে গঙ্গায় দূষণের মাত্রা ধরাছোঁয়ার বাইরে। এতে খাবি খাচ্ছে মাছের দল।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মরশুমের সময় ডিম সংরক্ষিত রাখার জন্য ইলিশ মাছের দরকার মিষ্টি জলের প্রবাহ। তাই তারা গঙ্গায় প্রবেশ করে। কিন্তু দূষণের ফলে গঙ্গার জল অত্যধিক লবনাক্ত। ফলে ইলিশ এখন গঙ্গার মোহনা থেকে ফিরে যাচ্ছে। গঙ্গা থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে তাদের অভিমুখ এখন বাংলাদেশের দিকে।
বাংলাদেশের মৎস্য দফতরের যুক্তি, পদ্মার পাড় বরাবর ভারী শিল্প, কলকারখানা তেমন গড়ে ওঠেনি। তাই এখনও পদ্মার মোহনা ইলিশের কাছে লোভনীয়। বাংলাদেশ সরকারের কড়া নিয়মে প্রজনন মরশুমে যখন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকে সে সময় জেলেদের মাসে ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেয় মৎস্য অধিদফতর। এতে মৎস্যজীবীদের মধ্যে কমছে মাত্রাতিরিক্ত ইলিশ ধরার প্রবণতা।