কৃষ্ণনগরকাণ্ডে সিট গঠন, ময়নাতদন্তে উঠে এল হাড়হিম করা তথ্য

বুধবারে কৃষ্ণনগরের (Krishnanagar Case) রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক নিহত তরুণীর অর্ধনগ্ন ও অর্ধদগ্ধ দেহ। সেই আশ্রমপাড়া এলাকায় পুলিশ সুপারের অফিসের কিছুটা…

Formation of SIT in Krishnanagar Incident, Horrifying Details Emerged from Autopsy

বুধবারে কৃষ্ণনগরের (Krishnanagar Case) রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক নিহত তরুণীর অর্ধনগ্ন ও অর্ধদগ্ধ দেহ। সেই আশ্রমপাড়া এলাকায় পুলিশ সুপারের অফিসের কিছুটা দূরে উদ্ধার হয় সেই তরুণীর দেহ। বর্তমানে সেই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই কৃষ্ণনগরে নিহত তরুণীর ধর্ষণ-খুনের ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করেছে রাজ্য পুলিশ।

এমনকি নির্যাতিতার পরিবারের দাবি মেনে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল (জেএনএম) হাসপাতালে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নিহত তরুণীর দেহের ময়নাতদন্তও হয়েছে। এ বিষয়ে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেছেন, “আমরা এই নিয়ে আদালতে আবেদন করি। আদালত তা মঞ্জুর করেছে। বৃহস্পতিবার কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত চলছে।”

   

বর্তমানে এই ঘটনার তদন্ত করা জন্য রাজ্য পুলিশ বৃহস্পতিবার সিট গঠন করার পাশাপাশি সিআইডি (রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ)-র সাহায্যও নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ)। এই সিটের নেতৃত্বে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে রয়েছে সে কথা জানিয়ে সুপ্রতিম সরকার বলেছেন, “ঘটনার নেপথ্যে সব সম্ভাব্য কারণ আমরা খতিয়ে দেখছি। সিআইডির সাহায্য নিচ্ছি। ঘটনাস্থলে এডিজি (সিআইডি) এসেছেন দল নিয়ে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞেরা এসেছেন। আমরা আশাবাদী, সত্য প্রকাশ পাবে।”

তবে এর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ পাওয়ার পরেই এ নিয়ে সমস্ত উত্তর তিনি দিতে পারবেন। তবে বৃহস্পতিবার কল্যাণীর জওহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল (জেএনএম) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করার পর হাড়হিম করা তথ্য দিলেন চিকিৎসক সৌম্যজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, খুনের পর নয় বরং আগেই জীবিত অবস্থায় তরুণীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর কথায়, জীবিত অবস্থাতেই যে তরুণীর গায়ে আগুন ধরানো হয়েছিল তা ময়নাতদন্তে প্রমাণ মিলেছে।

অ্যাসিড বা অন্য কোনও রাসায়নিক ঢেলে তরুণীকে পোড়ানো হয়েছিল বলে প্রমাণ মেলেনি। তবে আরও তদন্ত বাকি আছে বলেও জানিয়েছেন সেই চিকিৎসক। এদিকে রাজ্য পুলিশের উপর যে তাঁদের আস্থা নেই তা জানিয়ে নির্যাতিতার মা বলেছেন তাঁর মেয়ের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্ত চেয়ে তিনি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই কৃষ্ণনগরে নিহত তরুণীর ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় তরুণীর প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে সাতদিনের জেল হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এখনও পর্যন্ত যা জানা গেছে, নির্যাতিতার সঙ্গে প্রেমিকের সম্পর্ক ছিল মাত্র ৪ মাসের। ধৃত প্রেমিক বেঙ্গালুরুর একটি হোটেলের কর্মী। বেঙ্গালুরুতে প্রেমিকের ঠিকানায় গিয়েছিলেন সেই নির্যাতিতা ছাত্রী। সেসময় দুজনের মধ্যে আর্থিক লেনদেনও হয়েছিল। কিন্তু কে কাকে কি কারণে টাকা দিয়েছিল সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। ধৃত তরুণ দাবি করেছেন, ঘটনাস্থলে তিনি ছিলেনই না।

অভিযুক্তের মা-ও দাবি করেছেন, তাঁর পুত্র নির্দোষ। তবে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক দল। এই ঘটনার তদন্তে এখনও অবধি এক তরুণী সহ ২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।