নাকতলার দুর্গাপুজো ঘিরে ইতি উতি আলোচনা ‘ঠিকানা কারাগার’

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে গত ২২ জুলাই বিরাট অভিযান চালিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখ্যোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) দুটি ফ্ল্যাট থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধার করেছিল…

Partha Chatterjee, Arpita Mukherjee

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে গত ২২ জুলাই বিরাট অভিযান চালিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখ্যোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) দুটি ফ্ল্যাট থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধার করেছিল ইডি৷ শুধুমাত্র নিয়োগ দুর্নীতিতেই এই বিপুল টাকা উদ্ধার করেছে ইডি! এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই রাজ্যজুড়ে বিরাট অভিযান চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ গ্রেফতার করা হয়েছে তিন মিডলম্যানদের৷ সূত্রের খবর, অযোগ্য চাকরি প্রার্থীদের তালিকা নিয়োগ কর্তাদের কাছে পৌঁছে দিতেন এই মিডলম্যানরা৷ এদের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা জানতেই এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে৷

তবে অর্পিতার বাড়িতে যে পার্থর টাকা থাকত, সেই প্রমাণ আদালতের কাছে পেশ করেছে ইডি৷ ইডির আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অর্পিতার বেলঘড়িয়ার ফ্ল্যাট থেকে যে টাকা উদ্ধার হয়েছে, তা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। ইডির আধিকারিকরা আদালতের কাছে দাবি করেছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন চাকরির প্রক্রিয়া মেধার ভিত্তিতে নয়, সুপারিশে হয়েছিল। চাকরির বিনিময়ে ঘুষের টাকাই জমা পড়েছে ওখানে।

এমনকি প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়ি থেকে উদ্ধার নথিতে ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্যের নাম পাওয়া গিয়েছে। যেখান থেকে স্পষ্ট স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি পদের নিয়োগ হয়েছে টাকার বিনিময়ে। এছাড়াও একাধিক বিধায়কদের লেটার প্যাডে চাকরি প্রার্থীদের নামের তালিকা ও সুপারিশপত্র হাতে পেয়েছে ইডি৷ সেখান থেকেই স্পষ্ট, নিয়োগ হয়েছে টাকার বিনিময়ে। একইসঙ্গে আদালতের কাছে একাধিক নথি ও এলআইসির কাগজপত্র জমা করেছে ইডি, যেখানে সরাসরি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অর্পিতা মুখ্যোপাধ্যায়ের যোগ মিলেছে৷

Advertisements

ঘটনাচক্রে প্রসন্ন রায়, প্রদীপ সিং ও সুব্রত মালাকার নামে তিন জন মিডলম্যানদের গ্রেফতার করেছে সিবিআই। গত কয়েক বছরে যেভাবে প্রসন্ন সম্পত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে তদন্তকারী অফিসারদের সন্দেহ স্বাভাবিক। মনে করা হচ্ছে, প্রসন্ন রায়ের সঙ্গে নিয়োগের বিষয়ে যোগ রয়েছে পার্থর৷

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঠিকানা প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার৷ তবে আজই তাঁর জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষ। তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কথা মাথায় রেখেই আবারও জামিনের জন্য আবেদন করতে পারেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা৷ তবে যে সমস্ত তথ্য ইডির হাতে এসেছে, তাতে এত সহজে জামিন পাওয়া সহজ হবে না বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তাতে এবারের পুজোতে নাকতলা নয়, বরং জেলেই কাটবে পার্থ-অর্পিতার দুর্গাপুজো৷