বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বিপুল বিনিয়োগ ও ৪০ লক্ষ কর্মসংস্থানের বার্তা দিয়েছেন। অর্থনীতিবিদদের বেশিরভাগের যুক্তি এই দাবি কার্যকর করা সম্ভব না। এবার আগুনে ঘি পড়ল প্রাক্তন এনসজি কমান্ডো দীপাঞ্জন চক্রবর্তীর (Dipanjan Chakraborty) ফেসবুক পোস্ট ঘিরে। তিনি রাজ্যের বেকারত্ব নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন। কী লিখেছেন প্রাক্তন কমান্ডো?
“আমাদের মুম্বাইয়ের ফ্লাট বাড়ির (আজকালকার ভাষায় টাওয়ার) সংস্কারের কাজ চালু হয়েছে। গত চার মাস ধরে চারদিকে শুনতে পাচ্ছি বাংলা ভাষা।
বাইশটি ছেলে কাজ করছে। সবাই বীরভূমের ছেলে। কেউ মুরারই, কেউ বা রামপুরহাট কেউ ইলামবাজারের ছেলে। 22 জনের মধ্যে 4 জন স্নাতক, 11 জন উচ্চ মাধ্যমিক এবং মাধ্যমিক পাস, 7 জন মাত্র মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ। রোজ কথা হয় ওদের সঙ্গে, কাছেই একটা বাড়ি ভাড়া করে থাকে। ওদের ঘর গেরস্থালি নিয়ে রোজ ওদের সঙ্গে আড্ডা মারি, জানতে চাই ওদের ঘর-গেরস্থালির কথা। কাল জানালাম বাংলায় এবার দেড় কোটি কর্মসংস্থানের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তোমাদের এবার ঘরে ফেরার সুযোগ!
উত্তরে যা শুনলাম আপনাদের জানাচ্ছি …”দাদা, বাংলায় কাজ পাওয়া যায় না। যদি পাওয়া ও যায়, দিনে 300 টাকার বেশি মজুরি পাই না। তার থেকেও 50 থেকে 70 টাকা রোজ দিতে হয় মাথাপিছু, পাড়ার দাদাদের। না হলে পরের দিন কাজ করতে আসতে পারবো না।
এখানে 900 টাকা রোজ পাই। এক টাকাও কাউকে দিতে হয় না, বীমার সুবিধা রয়েছে। আজ পর্যন্ত আমাদের কোথাও কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়নি, তিন বছর হয়ে গেল। এদের ফেরানো যাবে তো বাংলায় ?”
এদিকে রাজ্য অর্থ দফতর সূত্রে খবর, আগামী মে মাসে সরকার বাজার থেকে ধার করবে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি (৫,৫০০ কোটি) টাকা। জুন মাসে ধার করবে সাড়ে চার হাজার (৪,৫০০ কোটি) টাকা। দু দফায় মিলিত ধারের পরিমাণ দশ হাজার (১০ হাজার কোটি) টাকা।
অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ধারের পর ধার করছেন তা বিপজ্জনক। রাজ্যের মোট উৎপাদনের অনুপাতে ধার বেড়েই চলেছে।
অর্থনীতির বিশ্লেষণে আসছে, রাজ্যে কর্মসংস্থানমুখী তেমন কিছু হয়নি তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের গত দশ বছরে। আসেনি কোনও শিল্প। নেই তেমন বিনিয়োগ। সেই সঙ্গে চলছে সরকারের দেওয়া বিভিন্ন ভাতা প্রকল্প। সেই প্রকল্পগুলির অর্থ বরাদ্দ করতে বিভিন্ন পরিকাঠামো তহবিল থেকে অর্থ সংযোজন করায় সংশ্লিষ্ট তহবিলে ধরছে টান। সেই ফাঁক ভরাট করতে বাজার থেকে ধারের পর ধার করছে বর্তমান সরকার