মিমির পর এবার অঙ্কুশ হাজরাকে দিল্লিতে তলব

কলকাতা: অনলাইন বেটিং অ্যাপ কেলেঙ্কারি ঘিরে উত্তাল টলিউড। সোমবার সকাল থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে অভিনেত্রী তথা সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।…

Actor Ankush Responds to ED Notice, Tollywood on Edge

কলকাতা: অনলাইন বেটিং অ্যাপ কেলেঙ্কারি ঘিরে উত্তাল টলিউড। সোমবার সকাল থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে অভিনেত্রী তথা সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তদন্তকারীদের মূল লক্ষ্য ছিল— তিনি কীভাবে ওই বেআইনি অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত হলেন এবং আর্থিক লেনদেনের ধরন কী ছিল। মিমির পর এবার অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরাকে (Ankush Hazra) দিল্লিতে ইডি সদর দফতরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় তাঁকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

Advertisements

সূত্রের খবর, অঙ্কুশের ক্ষেত্রেও একই ধরণের প্রশ্ন তোলা হবে— বিজ্ঞাপনের চুক্তি, অর্থের পরিমাণ, এবং কর প্রদানের নিয়ম ঠিকভাবে মানা হয়েছিল কি না। তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন, শুধু বিজ্ঞাপন নয়, বরং নির্দিষ্ট বিনিয়োগের মাধ্যমেও কয়েকজন তারকা অ্যাপটির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন।

   

ভারত সরকার ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে, অনলাইন বেটিং অ্যাপ সম্পূর্ণ বেআইনি। কেন্দ্রের বার্তা স্পষ্ট— অ্যাপের প্রচারক বা যাঁরা কোনওভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলার দুই জনপ্রিয় মুখ— মিমি চক্রবর্তী ও অঙ্কুশ হাজরা— দু’জনেই এই অ্যাপের বিজ্ঞাপনে যুক্ত ছিলেন, যা নিয়েই শুরু হয়েছে বিস্তর প্রশ্ন।

শুধু টলিউড নয়, বলিউড এবং ক্রিকেট জগতের একাধিক নামও জড়িয়েছে এই তদন্তে। অভিনেত্রী উর্বশী রাউতেলাকে ইতিমধ্যেই তলব করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রাক্তন ক্রিকেটার সুরেশ রায়না এবং শিখর ধাওয়ানকে গত মাসে দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রায়নার কাছ থেকে জানা হয়েছিল, কীভাবে অ্যাপ কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং অর্থ প্রদান করা হয়েছিল। ধাওয়ানকেও একই রকম প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।

ইডি-র তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা খুঁটিনাটি তথ্য খুঁজছেন— অ্যাপ কর্তৃপক্ষ কোন কোন অফিসারের মাধ্যমে তারকাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, অর্থ আদানপ্রদান কীভাবে হয়েছে এবং কে কে এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই মামলায় তারকাদের আর্থিক রেকর্ড এবং চুক্তিপত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি প্রমাণিত হয় যে, শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন নয়, বরং তারকারা সরাসরি অ্যাপের সঙ্গে আর্থিকভাবে যুক্ত ছিলেন, তবে তাঁদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। তবে তারকাদের সমর্থনে ভক্তরা সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্তি দিচ্ছেন— তাঁরা হয়তো বিষয়টির বেআইনি দিক সম্পর্কে জানতেন না। কিন্তু তদন্তকারীদের সাফ বক্তব্য— অজান্তে হোক বা জেনেবুঝে, আইন ভঙ্গ করলে দায় এড়ানো যাবে না।

অঙ্কুশ হাজরার আগামীকালের হাজিরা ঘিরে এখন টলিউড ও রাজনীতির অন্দরমহল সমান সরগরম। তদন্তে নতুন কোনও তথ্য উঠে এলে অনলাইন বেটিং কেলেঙ্কারি আরও বড় আকার নিতে পারে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।