নিউ দিল্লি স্টেশনে ঘটল ভয়াবহ দুর্ঘটনা (Delhi Stampede)। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৮ জনের। রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উঠছে চরম অব্যবস্থার অভিযোগ। এই ঘটনা নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘দিল্লিতে পদপিষ্টের ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যুর খবর অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। এই ঘটনা আমাদের একটা বড় বিষয় দেখিয়ে দেয়, তা হল, যখন নাগরিকদের সুরক্ষা বিষয়ক বিষয় আসে তখন সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা খুব জরুরি।’
মমতা আরও বলেন, ‘মহাকুম্ভে যাত্রা করা তীর্থযাত্রীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সুবিধা দেওয়ার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। যাতে তারা এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি না হন। তাদের যাত্রা যেন নিরাপদ ও সুনিয়ন্ত্রিত হয়, সেটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’ তিনি শোকাহত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
মমতার প্রতিক্রিয়া এসেছে যখন, নয়াদিল্লি স্টেশনে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর রেল কর্তৃপক্ষকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। ঘটনায় মৃতদের পরিবারের সদস্যরা শোকস্তব্ধ, কিছু যাত্রী অভিযোগ করেছেন, দুর্ঘটনার সময় তারা নিজের পরিবারকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ‘একজনের পর একজন আমার স্ত্রী ও কন্যার ওপর পড়ে গিয়েছিল। আমার ছেলে কোথায়, সেটা বুঝতে পারছি না। আমি জানতে পেরেছি আমার স্ত্রী ও মেয়ে মারা গেছে।’
দুর্ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে রেলওয়ে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার কেপিএস মালহোত্রা জানিয়েছেন, বিলম্বিত ট্রেনের কারণে স্টেশনে পদপিষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে ছিল, আর সেখানে ছিল অনেক লোক। ১২ এবং ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অন্য দুটি ট্রেনের দেরি হয়েছিল, যার ফলে প্ল্যাটফর্মে ভিড় বেড়ে যায়।’
সংবাদ সংস্থা এএনআই-এ প্রকাশিত একটি ভিডিওতে উত্তর রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক হিমাংশু শেখর জানিয়েছেন, ‘এই দুর্ঘটনার সময় ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে মগধ এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে ছিল, এবং ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ছিল জম্মুগামী উত্তর সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস। যখন প্যাসেঞ্জাররা নামছিল, তখন সিঁড়িতে একজন যাত্রী পড়ে যান। এর ফলস্বরূপ আরও কিছু যাত্রী আহত হন এবং দুর্ঘটনা ঘটে।’
অনেকের মতে, এই দুর্ঘটনা রেলের ব্যবস্থাপনা ও সুরক্ষা ব্যবস্থার গুরুতর ত্রুটিকে তুলে ধরেছে। যখন এত বড় পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে, তখন তা কেবল একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং সুরক্ষা ব্যবস্থার গাফিলতির পরিচায়ক। যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।