তৃণমূলের ডিজিটাল সাফল্যে উচ্ছ্বসিত দেবাংশু, দিলেন টাস্ক

কলকাতা: রাজনৈতিক আন্দোলন মানেই এখন আর শুধুমাত্র রাস্তায় জমায়েত নয়, বরং সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার। এই প্রেক্ষাপটে বিজেপির আইটি সেলের কার্যকলাপ বরাবরই আলোচনার…

"Debangshu Attacks Dilip Ghosh Over His Old 'Let Hindus Die' Remark

কলকাতা: রাজনৈতিক আন্দোলন মানেই এখন আর শুধুমাত্র রাস্তায় জমায়েত নয়, বরং সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার। এই প্রেক্ষাপটে বিজেপির আইটি সেলের কার্যকলাপ বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রে থেকেছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে বিজেপি। তবে তৃণমূল কংগ্রেস এবার সেই ডিজিটাল দৌড়ে সমানতালে পাল্টা দেওয়ার চেষ্টা করছে আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya) সাহায্যে।

Advertisements

২১শে জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবসের সভাকে ঘিরে যেমন মাঠে ছিল বিপুল জনসমাগম, তেমনি ভার্চুয়াল জগতেও মিলেছে রেকর্ড সংখ্যক দর্শক। তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “দিদির ফেসবুক পেজ থেকে ভিউ ২৮ লক্ষ, পার্টির অফিশিয়াল পেজ থেকে ৩৩ লক্ষ। মোট মিলিয়ে রাত ৮:৪৫ পর্যন্ত ভিউ ৬১ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে।”

   

তাঁর কথায়, “ভিড় ধরে আনা যায়—এমন কটাক্ষ বারবার করা হয়েছে। বলা হয়েছে গ্রামের মানুষ শুধুমাত্র ডিম ভাতের লোভে আসে সভায়। তাহলে ফেসবুকের এত ভিউ কি ডিম ভাত দেখিয়ে করানো যায়? এটা কি জোর করে করানো যায়?” এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন দেবাংশু।

এছাড়াও তিনি তাঁর টিমের সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট ‘টাস্ক’ বেঁধে দেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তিনি লেখেন, “আজ রাত ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে প্রত্যেক কর্মীকে ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করতে হবে। কে কত ভালো বলতে পারেন, সেটা জরুরি নয়। নিজেদের অভিজ্ঞতাই ভাগ করুন।”

এই ফেসবুক লাইভ কর্মসূচির মাধ্যমে তৃণমূলের উদ্দেশ্য একদিকে নিজেদের কর্মীদের সক্রিয় রাখা, অন্যদিকে বিপুল অনলাইন উপস্থিতি দেখিয়ে বিজেপিকে পাল্টা বার্তা দেওয়া। দেবাংশু আরও জানান, “লাইভ শেষ হওয়ার পর প্রত্যেককে নিজের আইটি নেতৃত্বকে সেই লাইভের লিঙ্ক পাঠাতে হবে, যাতে তা নজরে আসে এবং বিশ্লেষণ করা যায়।”

ডিজিটাল রাজনৈতিক লড়াইয়ে জোরালো হচ্ছে তৃণমূল:
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব রাজনীতিতে ক্রমেই বেড়ে চলেছে। রাজ্যজুড়ে বিজেপির প্রচার পদ্ধতিতে বড় ভূমিকা রাখছে তাদের আইটি সেল। তবে এবার তৃণমূলও যে পিছিয়ে নেই, সেই বার্তা দিতে মরিয়া শাসক দল। দেবাংশুর এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ডিজিটাল সংহতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা নেবে বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

তাঁদের মতে, মাঠে যেমন কর্মী ও সমর্থকদের ভিড় সংগঠিত করা জরুরি, তেমনি ডিজিটাল মিডিয়াতেও একাধিক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে আধুনিক রাজনীতির এক নতুন দিশা তৈরি করছে তৃণমূল।

অবশ্য এই ডিজিটাল সাফল্যের দাবিকে বিজেপির তরফে এখনও খণ্ডন করা হয়নি। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, ডিজিটাল মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার এখন ভবিষ্যতের নির্বাচনী রণনীতি নির্ধারণে বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠছে।

২১ জুলাইয়ের সভা শুধু মাঠেই নয়, ডিজিটাল দুনিয়াতেও যে প্রভাব ফেলেছে, তৃণমূলের দাবিতে সেটা স্পষ্ট। এখন দেখার বিষয়, এই ডিজিটাল প্রচার কতটা বাস্তব রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে এবং তা আদৌ বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া কৌশলের মোকাবিলা করতে সক্ষম হয় কি না।