যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যু ঘিরে এই মুহূর্তে উত্তাল রাজ্য থেকে গোটা দেশ। এমন আবহে এল আরেকটি মৃত্যু সংবাদ। আরজিকর হাসপাতালে ডাক্তারি পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুতে শোরগোল এই মুহূর্তে। রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
জানা যাচ্ছে মৃত ছাত্রের নাম শুভ্রজ্যোতি দাস এবং তাঁর আরজিকর হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ চলছিল। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে যে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে নার্ভের ওষুধ খেতেন জুনিয়র ডাক্তার শুভ্রজ্যোতি দাস। সেই ওষুধের প্রক্রিয়াতেই মৃত্যু হয়েছে ওই পড়ুয়ার বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আসল কারণ নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে ৭টা নাগাদ অচৈতন্য অবস্থায় আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ওই পড়ুয়াকে। এরপর রাত ১২:৪০ নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। শুভ্রজ্যোতির বাবা মা বাংলাদেশে থাকেন। শুভ্রজ্যোতি থাকতেন বিরাটি সংলগ্ন নিমতা অঞ্চলে তাঁর কাকার বাড়ির কাছে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে। জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে ২ দিন বের হননি তিনি। এই দেখে তাঁর কাকার সন্দেহ হয়। এরপরই দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় শুভ্রজ্যোতিকে। দ্রুত তাঁকে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা তাঁকে বাঁচানোর। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর থেকে উত্তাল হয় যাদবপুর। শুধু যাদবপুর নয় স্বপ্নদীপের বাড়ি নদিয়ার বগুলাতেও তার মৃত্যুর প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলে। হোস্টেলে ব়্যাগিং হয়েছিল কিনা খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ। স্বপ্নদীপের মোবাইল খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল। শুক্রবার ছেলের মৃত্যুতে হস্টেলের আবাসিকদের বিরুদ্ধে খুনের ধারা রুজু করেছেন বাবা রমাপ্রসাদ কুণ্ডু। তবে স্বপ্নদীপের বাবা নির্দিষ্ট করে কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেননি। শুক্রবার সন্ধ্যাতেই আটক করা হয় প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে। জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করে পুলিশ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যু ঘিরে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে। স্বপ্নদীপের বাবাকে ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বপ্নদীপের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে পড়ে যাওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। ছাত্রের মাথার বাঁ দিকের হাড়ে চিড় ছিল। বাঁ দিকের পাঁজরের হাড়ও ভেঙে যায়। কোমরও ভেঙে গিয়েছিল। তবে স্বপ্নদীপের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল গুরুতর। সেটা কেন, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।