ভোট পরবর্তী হিংসা: রাজ্যকে তুলোধোনা হাইকোর্টের

ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্যকে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যে ভোটের পরেই বেশ কয়েকটি জায়গায় ভোট পরবর্তী অশান্তির ছবি উঠে আসে। আর এই ঘটনায় কড়া…

Calcutta-High-Court

ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্যকে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যে ভোটের পরেই বেশ কয়েকটি জায়গায় ভোট পরবর্তী অশান্তির ছবি উঠে আসে। আর এই ঘটনায় কড়া ভাষায় রাজ্য এবং পুলিশ প্রশাসনকে কটাক্ষ করল রাজ্যের উচ্চ আদালত। বিচারপতি কৌশিক চন্দের মন্তব্য, ” বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখেছি ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস চলছে এবং এটা বন্ধ করতে হবে।”

ভোটের ফলাফলের ঠিক পরে একাধিক অশান্তির অভিযোগ আসতে শুরু করে। নদীয়ার কালীগঞ্জে এক বিজেপি কর্মীর খুন ঘিরে আলোড়ন শুরু হয়। দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে সন্দেশখালি। এমনকি, আজ, মামলার শুনানির সময়ও, পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের যমুনা এলাকায় বিজেপি সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুরের খবর আসে। গত কাল তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করে আসবাবপত্রে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এক বিজেপি কর্মীর চায়ের দোকান ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ক্যানিংয়ে আর এক বিজেপি নেতার বাড়িতে ইটবৃষ্টির অভিযোগ শোনা যায়। হাওড়ার বাঁকড়ায় আবার সিপিএম বুথ এজেন্টের দোকান ভাঙচুর চালানো হয় বলেও খবর। শুধু শহরতলি নয়, কলকাতার নারকেলডাঙাতেও বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে।

   

এই পরিস্থিতিতেই বিচারপতি কৌশিক চন্দের মন্তব্য, ‘গত বিধানসভা ভোটের পর যা হয়েছিল এখনও তাই হচ্ছে। আপনাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। আপনারা কি অস্বীকার করতে পারবেন যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস হচ্ছে না?’এই রাজ্য ছাড়া আর কোথাও এই অভিযোগ আছে?” তবে এই মন্তব্যের পালটা দিয়েছে রাজ্য। রাজ্যের তরফে বলা হয়েছে, ” বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু আছে। যে গণ্ডগোলের কথা বলা হচ্ছে, সেটা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাও হতে পারে।”

এর পাল্টা বিচারপতির বক্তব্য, ” রাজ্য যদি এটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে বা সমস্ত তথ্য আদালতে সামনে পেশ না করে, তাহলে আগামী ৫ বছর কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিতে হবে। এই ধরনের ঘটনা আটকাতেই হবে।” মামলাকারীরা দাবি করেছেন যে এই পর্যন্ত ভোটে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই বিষয়ে বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় মামলাকারীকে প্রশ্ন করেন, ‘আমরা কী করে জানব যে, ১১ জনকে হত্যা করা হয়েছে?’ তাতে মামলাকারীর তরফে জানানো হয়, তাদের কাছে সব তথ্য রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে মানুষ যাতে সঙ্গে সঙ্গে এফআইআর করতে পারেন, সেই ব্যাপারে বিচারপতিদের পরামর্শ দিতে বলেন তিনি। বিচারপতির মন্তব্য শুনে রাজ্যের তরফে বলা হয়, ‘প্রত্যেক থানা, পুলিশ সুপার, ডিজি এবং আইজির নিজস্ব ই-মেল আইডি আছে। কেউ থানায় না গিয়েও অভিযোগ জানাতে পারেন।’ এর ১০ মিনিটের মধ্যেই রাজ্যকে ডিজি র ই-মেল আইডি জানানোর নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।