রাজ্যের সরকারি পরীক্ষায় সংরক্ষণ নেই বাংলাভাষীদের ! বিক্ষোভ বাংলাপক্ষের

নিয়োগদুর্নীতি নিয়ে এমনিতেও সরগরম বাংলা। টাকা দিয়েই মিলছিল চাকরি। বঞ্চিত হয়েছে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ।এবার এই বাংলাতেই বিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাভাষীদের সঙ্গে চলছে বঞ্চনা।মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের…

নিয়োগদুর্নীতি নিয়ে এমনিতেও সরগরম বাংলা। টাকা দিয়েই মিলছিল চাকরি। বঞ্চিত হয়েছে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ।এবার এই বাংলাতেই বিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাভাষীদের সঙ্গে চলছে বঞ্চনা।মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ইন্টারভিউতে জায়গায় নেই বাংলাভাষী প্রার্থীদের। তালিকা দেখে চোখ কপালে উঠেছে আমি বাঙালির।বাংলা ভাষার ভিত্তিতে তৈরী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের সরকারি পরীক্ষায় বাংলার ছেলে মেয়েদেরই সুযোগ নেই।

রাজ্যের মাটিতেই রাজ্য সরকারি চাকরিতে বঞ্চিত বাঙালি চাকরি প্রার্থীরা। বাংলায় মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের চাকরির পরীক্ষা শুধুমাত্র ইংরেজিতে হয়, বাংলায় হয় না। বাংলায় ৮৬% মানুষ বাঙালি। কিন্তু বাংলায় সরকারি চাকরির পরীক্ষা বাংলায় দেওয়ার সুযোগ নেই। অথচ সব রাজ্যে রাজ্য সরকারি চাকরিতে সেই রাজ্যের মূল ভাষার পেপার বাধ্যতামূলক থাকে। যাতে রাজ‍্যের মূল ভাষা বাধ‍্যতামূলক করার ফলে চাকরিতে ভূমিপুত্রদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের চিত্র একেবারেই আলাদা। আর তাতেই গর্জে উঠলে বাংলা পক্ষের গর্গ চট্টোপাধ‍্যায়।

এর আগে বাংলা পক্ষ সংগঠন এবার মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস পরীক্ষায় বাংলা ভাষা বাধ‍্যতামূলক করার দাবিতে ২০২২ এর ২৬ শে ডিসেম্বর কমিশনের চেয়ারম‍্যানের কাছে ডেপুটেশন দেয়। কিন্তু কোন সদর্থক পদক্ষেপ না নেওয়ায় মৌলালিতে কমিশনের অফিসের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হল সংগঠনের পক্ষ থেকে।

বাংলা পক্ষর সাধারন সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ‍্যায় এদিন সাম্প্রতিক কলকাতা কর্পোরেশনের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদের পরীক্ষায় অন‍্য রাজ‍্যের পরীক্ষার্থীদের সংখ্যাধিক্যের কথা তুলে ধরেছেন । বাঙালি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার বা ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার হন। তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে খবর আছে বাংলা ভাষা বাধ‍্যতামূলকের ফাইল দীর্ঘদিন আটকে রেখেছে পৌর দপ্তরের উর্দুভাষী সচিব খলিল আহমেদ। অবিলম্বে এই ফাইলের বাস্তবায়ন না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে বলে জানান তিনি। ‘Yadav’ পদবীর কেউ বাংলায় তফশিলী উপজাতি কিভাবে হয় সে প্রশ্নও তোলেন৷ পাশাপাশি জানান, আমরা এফআইআর করবো। বাঙালি ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত এভাবে ধ্বংস হতে দেব না।

বাংলা পক্ষের সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি বলেন, “দশ মাস পেরিয়ে গেছে প্রথম ডেপুটেশনের,বাঙালি চাকরিপ্রার্থীদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে। পৌর পরিষেবা সরাসরি বাঙালি নাগরিকের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত। বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশের ফলে যেমন চাকরির সুযোগ কমছে, তেমনি পরিষেবার ক্ষেত্রেও অসুবিধা হচ্ছে।এটা চলতে পারে না। অবিলম্বে বাংলা ভাষার পরীক্ষা বাধ‍্যতামূলক করতে হবে।”

এছাড়াও এদিনের বিক্ষোভ সভায় কলকাতা জেলার সম্পাদক অরিন্দম চ‍্যাটার্জী, উত্তর ২৪ পরগণা (শহরাঞ্চল) এর সম্পাদক পিন্টু রায় বক্তব‍্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা গ্রামীন সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক দেবাশীষ মজুমদারও।

প্রতিবাদ সভার শেষে মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম‍্যান মাননীয় রজত কুমার বসুর সাথে গর্গ চট্টোপাধ‍্যায়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বলেন। আলোচনা সদর্থক হয়েছে বলে জানানো হয়। WBCS এর মতো এই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাতেও বাংলা বাধ‍্যতামূলক করাতে তারা সক্ষম হবেন বলে আশাবাদী বাংলা পক্ষ নেতৃত্ব ।