মেট্রোর বুকিং কাউন্টারবিহীন স্টেশনের তালিকায় এবার বেঙ্গল কেমিক্যাল

যাত্রী সংখ্যা কম হওয়ার কারণে মেট্রো (Metro) কর্তৃপক্ষ একে একে তাদের বিভিন্ন স্টেশনে বুকিং কাউন্টার (Booking Counter) তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এবার সেই তালিকায়…

Metro Station Booking Counter

যাত্রী সংখ্যা কম হওয়ার কারণে মেট্রো (Metro) কর্তৃপক্ষ একে একে তাদের বিভিন্ন স্টেশনে বুকিং কাউন্টার (Booking Counter) তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল বেঙ্গল কেমিক্যাল (Bengal Chemical) স্টেশন (Station), যা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রুটের অন্তর্গত। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে এই স্টেশনে বুকিং কাউন্টার কার্যত উঠে যাচ্ছে এবং যাত্রীদের টিকিট সংগ্রহের জন্য শুধুমাত্র অটোমেটেড সিস্টেম ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে, এই স্টেশনটি বুকিং কাউন্টারবিহীন (Counterless) স্টেশন হিসেবে পরিগণিত হবে।

আগেই, মেট্রো কর্তৃপক্ষ কিছু স্টেশন, যেমন জোকা-মাঝেরহাট এবং নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোপথের একাধিক স্টেশনে বুকিং কাউন্টার তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে এই সিদ্ধান্তের ফলে যাত্রীদের কাছে যে সুবিধা আসবে না, তা কিন্তু নয়। যাত্রীদের জন্য টিকিট ক্রয়ের যন্ত্র বা স্মার্ট কার্ড রিচার্জ করার জন্য আধুনিক অটোমেটেড মেশিন ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়েছে, যাতে যাত্রীরা সহজেই তাদের টিকিট বা স্মার্ট কার্ড পেতে পারেন। এর মাধ্যমে মেট্রো কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে সময় ও শক্তি সাশ্রয় করতে চায়।

   

বেঙ্গল কেমিক্যাল (Bengal Chemical) স্টেশনটি শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ যাওয়া রুটে অবস্থিত এবং এটি শহরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনের মধ্যে পড়ে। তবে, মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, এই স্টেশনে (Station) যাত্রী ওঠানামার সংখ্যা অনেক কম, ফলে এখানে টিকিট কাউন্টার চালু রাখার কোনও প্রয়োজন ছিল না। এই স্টেশনে যাত্রীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় মেট্রো কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, যাতে অর্থ সাশ্রয় করা যায় এবং অপচয় রোধ করা যায়।

মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রীদের টিকিট বা স্মার্ট কার্ড কেনার জন্য ইলেকট্রনিক টিকিটিং মেশিনের ব্যবহার আরও বাড়ানো হবে। ফলে, যাত্রীরা তাদের সুবিধামত টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন এবং দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলাও থাকবে না। এছাড়া, স্মার্ট কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য এই ব্যবস্থা আরও সুবিধাজনক হবে, কারণ তারা মেট্রোতে প্রবেশের সময় দ্রুত এবং সোজাসুজি পাস করতে পারবেন। এছাড়া, স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে যাত্রীরা মেট্রোর অন্যান্য পরিষেবাগুলির জন্যও সুবিধা পেতে পারেন।

তবে এই সিদ্ধান্তে কিছু যাত্রী অখুশি হতে পারেন, যারা মেট্রো স্টেশনে কাউন্টার চালু থাকার সুবিধা পছন্দ করতেন। তারা আশা করতেন যে, বুকিং কাউন্টার থেকে সরাসরি টিকিট বা অন্যান্য পরিষেবা পাওয়া যাবে। তবে মেট্রো কর্তৃপক্ষের মতে, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে এই পরিবর্তনটি সমগ্র মেট্রো ব্যবস্থার জন্য লাভজনক হবে, কারণ এটি যাত্রীদের সেবা উন্নত করবে এবং কর্মীদের জন্যও অপচয় কমাবে।

এছাড়া, মেট্রো কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য হলো, স্টেশনে কাউন্টার চালু না রাখলে কর্মীদের সংখ্যা কমানো সম্ভব হবে, যার ফলে আরও দক্ষ এবং কার্যকরী পরিচালনা সম্ভব হবে। স্টেশনের ছোট আকার এবং কম যাত্রীদের উপযোগিতার কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে, মেট্রো পরিষেবার আধুনিকীকরণ এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে অনেক স্টেশনে এই ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা আগামী দিনে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

এটি শুধু বেঙ্গল কেমিক্যাল (Bengal Chemical) স্টেশনের (Station) জন্য নয়, গোটা কলকাতার মেট্রো নেটওয়ার্কের জন্য একটি বড় পরিবর্তন। মেট্রো কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই তাদের অন্যান্য স্টেশনে বুকিং কাউন্টার তুলে দেওয়ার মাধ্যমে বেশ কিছু সমস্যা সমাধান করেছে। এর ফলে, তারা তাদের সম্পদের ব্যবহার আরও দক্ষতার সঙ্গে করতে সক্ষম হয়েছে এবং যাত্রীদের জন্য আরও উন্নত পরিষেবা প্রদান করতে পারছে।

যদিও এই পরিবর্তনের ফলে কিছু যাত্রীদের জন্য সমস্যা হতে পারে, তবে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মেট্রো পরিষেবাকে আরও উন্নত করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। স্মার্ট কার্ড এবং অটোমেটেড টিকিটিং সিস্টেমের ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে, মেট্রো কর্তৃপক্ষ আশা করছে যে, যাত্রীদের জন্য সুবিধা বৃদ্ধি পাবে এবং সেইসঙ্গে মেট্রো পরিষেবা আরও সাশ্রয়ী ও কার্যকরী হবে।

মেট্রো কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের ফলে অনেক স্টেশনে (Station) ট্রেন চলাচলের সময় দ্রুততর হতে পারে, কারণ যাত্রীদের টিকিট সংগ্রহের প্রক্রিয়া হবে আরও দ্রুত এবং সহজ। এটি এমনকি ট্রেনের সময়সূচিতেও প্রভাব ফেলবে, কারণ কাউন্টার লাইনে দাড়ানো সময় সাশ্রয় হবে এবং স্টেশনগুলোতে যাত্রীদের ভিড়ও কমবে।

অন্যদিকে, যাত্রীদের মধ্যে যারা স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি সুযোগ। স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে টিকিট কেনা এবং মেট্রো পরিষেবা ব্যবহার করা অনেক সহজ হবে, যার ফলে যাত্রীদের জন্য সেবার মান আরও উন্নত হবে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ আশা করছে, ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যক যাত্রী স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করবে, যার ফলে ট্রেনের চলাচল আরও দ্রুত ও সুশৃঙ্খল হবে।

শেষে, বলা যেতে পারে যে, মেট্রো কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপটি মেট্রো পরিষেবার আধুনিকীকরণের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে কলকাতা মেট্রো (Kolkata Metro) আরও কার্যকরী এবং সাশ্রয়ী হবে, যা শহরের পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে সহায়ক হবে।