Basking became the new platform in Bengal for
টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশনের ফুটপাথ। মেট্রোর গেট দিয়ে বেরোতেই চোখ আটকে যাবে ফুটপাথে। ফুটপাথ থেকে ভেসে আসছিল আধুনিক গানের সুর, সঙ্গে তাল মিলিয়ে গিটারের ধ্বনি। মুহূর্তের মধ্যে সারাদিনের গ্লানি-যন্ত্রণা ভুলিয়ে দিল সেই কণ্ঠ।
হঠাৎ ভর সন্ধ্যায় এই ভিড়-ভাড় রাস্তার মাঝে দাঁড়িযে কে এমন মিষ্টি সুরে গান গাইছে?চমকে যাবেন। লক্ষ্য করতেই নজরে পড়বে ছিপছিপে তরুণ যুবকের উপর। পরনে শ্যাওলা রঙের ফুল স্লিভ হুডি, নেভি ব্লু রঙের ট্রাক প্যান্ট। পায়ে কালো স্পোর্টস শু। আর হাতে গিটার। তার পাশে রাখা একটি প্লেকার্ড জ্বলজ্বল করছে। তাতে লেখা ‘থার্ড স্টেজ’।
একের পর এক অনর্গল গান গেয়েই চলেছে সে। তার পিছন থেকে ছুটছে অটো-গাড়ি-বাস। আর তার পাশ কাটিয়ে তখন অজস্র মানুষ বাড়ির পথ ধরেছেন। কেউ থমকে দাঁড়িয়ে পড়ছেন, কেউ ছেলেটির পাশে পড়ে থাকা টুপিতে ১০-২০ টাকা অনুদান গুঁজে চলে যাচ্ছেন। প্রত্যেক গানের শেষে শ্রোতাদের হাততালিও কুড়াচ্ছে ওই যুবক।
বাস্কিং’ এই শব্দটার সঙ্গে সব বাঙালির এখনও তেমন পরিচয় হয়নি। শুধু যাঁরা নিয়মিত গানের চর্চা করেন বা গান ভালোবাসেন তাঁদের বাদে। কারণ, এর প্রচলন মধ্য প্রাচ্য দেশগুলোতে হলেও বাংলায় তেমন একটা দেখা যায় না। যদিও পথ নাটিকার প্রচলন এরাজ্যে বহু পুরোনো।
তবে সম্প্রতি দিল্লির রাস্তায় এই সমস্ত বাস্কিং শিল্পীরা বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। যাঁদের মধ্যে অন্যতম বরুণ দাগার। তিনি তাঁর অনন্য নাচের শৈলীর জন্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন।
আরেক বাস্কার শিল্পী আনশুল রিয়াজি। পেশায় কারখানার শ্রমিক। কিন্তু তিনিও ইন্টারনেটে ঝড় তুলেছেন। তাকে প্রায়ই দিল্লির জনবহুল রাস্তায় পারফর্ম করতে দেখা যায়। তার কণ্ঠ তাৎক্ষণিকভাবে পাশ দিয়ে যাওয়া মানুষকে আকর্ষিত করছে। নেটিজেনরা তার বাদ্যযন্ত্র প্রতিভায় বিস্মিত। এমনকী, তার কণ্ঠের প্রশংসায় নেট দুনিয়ায় ঝড় উঠেছে।
এই বাস্কিংয়ের মানে দাঁড়াচ্ছে, স্বেচ্ছায় অনুদানের জন্য রাস্তায় বা যে কোনও সার্বজনিক স্থানে সংগীত পরিবেশন করার প্রক্রিয়া। তবে যাই হোক, এই তরুণ শিক্ষিত যুবক কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিনব এই উদ্যোগ কুর্নিশযোগ্য।