Bangla pokkho: পরিবারসহ পলাশ অধিকারীর মুক্তির দাবিতে ফের রাস্তায় বাংলা পক্ষ

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বাসিন্দা দুই বাঙালি পলাশ অধিকারী, তার স্ত্রী শুক্লা অধিকারী। স্ত্রী ও দেড় বছরের পুত্র আদি-সহ পলাশ অধিকারীকে চলতি বছরের ২৭ জুলাই বাংলাদেশি…

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বাসিন্দা দুই বাঙালি পলাশ অধিকারী, তার স্ত্রী শুক্লা অধিকারী। স্ত্রী ও দেড় বছরের পুত্র আদি-সহ পলাশ অধিকারীকে চলতি বছরের ২৭ জুলাই বাংলাদেশি হিসেবে দাগিয়ে গ্রেপ্তার করে বেঙ্গালুরু পুলিস। তাদেরকে FOREIGNERS ORDER ACT, 1948 (U/s-7(2)); FOREIGNERS ACT, 1946 (U/s-14 (B)) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে আজ ভাইফোঁটার দিনে ফের রাস্তায় নেমেছে বাংলা পক্ষ। অভিনব পদ্ধতিতে বিজেপি শাসিত কর্নাটক সরকারের এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে বাংলা পক্ষ (Bangla pokkho)।

বিজেপি শাসিত কর্ণাটক সরকারের বাঙালির উপর আক্রমণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে । তারা পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর বিধানসভার জৌগ্রামের বাসিন্দা পলাশ অধিকারী সহ তার স্ত্রী এবং পুত্রকে বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতার করার আগে বাঙালির বস্তি ভেঙে দেয়। নানা সময় নানা বাঙালিকে বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, বিজেপি শাসিত কর্নাটক সরকারের প্ররোচনায়।

   

পলাশ অধিকারী, শুক্লা অধিকারী ও তাদের পুত্র দেড় বছরের আদির মুক্তির দাবিতে ভাইফোঁটার দিন কলকাতার রানুছায়া মঞ্চে অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করা হয় বাংলা পক্ষের তরফ থেকে। প্রতীকি ভাইফোঁটারও আয়োজন করা হয়। ভাই ফোটার আয়োজন করা হয় ঠিকই কিন্তু ছিল না প্লেটে কোনো মিষ্টি,ছিল না কপালে ভাইফোঁটাও। বর্ধমানের বাঙালি বোন বাঙালি হওয়ার জন্য বেঙ্গালুরুর জেলে বন্দী,তাই এই অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এইভাবেই প্রতীকি ভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়েছিল বাংলা পক্ষের তরফ থেকে। প্রতিবাদ কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা জেলার সম্পাদক অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় ও অন্যান্যরা।

সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বাঙালি ভাইবোনদের বেঙ্গালুরুর জেল থেকে মুক্ত করে আনবোই। বাঙালি হওয়া কি অপরাধ? বাঙালিকে প্রতিনিয়ত আক্রমণ করা হচ্ছে নানা বিজেপি শাসিত রাজ্যে। আজকের এই পুণ্য ভাইফোঁটার দিনে আমাদের বোন শুক্লা বেঙ্গালুরুর জেলে বন্দি৷ আমরা ওদের জন্য শেষ পর্যন্ত লড়বো”।

বাংলা পক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়,”বাংলার সমস্ত চাকরি-কাজ- ব্যবসা দখল করছে বহিরাগতরা, বঞ্চিত হচ্ছে বাঙালিরা। বাধ্য হয়ে তারা অন্য রাজ্যে কাজে যাচ্ছে। আর বাইরে গিয়ে বিভিন্ন অত্যাচারের মুখে পড়তে হচ্ছে বাঙ্গালিদের। তাই যাতে আর বাঙালিকে বাইরে কাজে যেতে না‌হয়, বেসরকারি চাকরি- ঠিকা কাজ- টেন্ডারে ভূমিপুত্র সংরক্ষণ সময়ের দাবি। আমরা সেই জন্যও লড়ছি।”

বাংলা পক্ষের তরফ থেকে দাবি করা হয়, জেলবন্দী পলাশ অধিকারীর পরিবারের সাথে কথা বলতে গিয়ে একটা ভয়ংকর কথা জানতে পারে বাংলা পক্ষ। ওনাদের আইনজীবী আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড জমা দিলেও জমির দলিলের ইংরেজি ভার্সান জমা দিতে বলা হয়েছে। বাংলা পক্ষ এই তিন বাঙালির মুক্তির জন্য বেঙ্গালুরুর নানা বাঙালি সংগঠন ও আইনজীবীদের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছে।

বাংলা পক্ষের তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে, বাংলা পক্ষ ঐ পরিবারের পাশে আছে।তারা তাদের বাড়িও গিয়েছিল, তাদের পরিবারের সাথে কথা বলেছে। স্থানীয় বিধায়ক ও বাংলার প্রশাসনের সাথেও কথা বলেছে বাংলা পক্ষ। বাংলা পক্ষ বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনারকে মেইল করেছে, তাদের যাতে জেল থেকে দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হয়। 

বাংলার বাইরে মূলত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে বাঙালিকে বাংলাদেশি দাগিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে। ভারতে বাঙালি হিসাবে জন্মানো কি অপরাধ? এই বলেও বিজেপি সরকারের দিকে প্রশ্ন ছুড়েছে বাংলা পক্ষ। এইসব অন্যায় অত্যাচারের বড় সমাধান হিসেবে, বাংলায় সমস্ত বেসরকারি চাকরি, ঠিকা কাজে ভূমিপুত্র সংরক্ষণের দাবি জোরালো করছে ‌ বাংলার শুভাকাঙ্ক্ষী ‘বাংলা পক্ষ’।