বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনে (Ballygunge By Election) সর্বশেষ টিএমসির জয়ের ব্যবধান ছিল ৭৫ হাজার ভোট। জয়ী হয়েছিলেন আদ্যন্ত ব্রাহ্মণ পরিবারের সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তবে তাঁর জয়ের সবটাই মমতা আনুকুল্য। বিশ্লেষকরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বালিগঞ্জবাসী ভোট দেন। বঙ্গ রাজনীতির রঙিন চরিত্র সুব্রত প্রয়াত। ফলে বালিগঞ্জে হচ্ছে উপনির্বাচন। ১২ এপ্রিল ভোট।
বালিগঞ্জের ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে বিজেপি ছেড়ে আসা বাবুল সুপ্রিয় কে। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের সাংসদ থাকাকালীন বাবুলের বিরুদ্ধে বারবার সংখ্যালঘু বিদ্বেষ মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে। আরও অভিযোগ, আসানসোলে ভয়াবহ গোষ্ঠী সংঘর্ষের সময় বাবুল সুপ্রিয় উস্কানিমূলক বার্তা দিয়েছিলেন। উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির বাবুলকে দলে টেনে বালিগঞ্জের মতো মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় প্রার্থী করে ঝুঁকি নিয়েছেন মমতা, এমনই গুঞ্জন তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে।
পরিস্থিতি বুঝে বাবুল নেমেছেন সংখ্যালঘু মান ভঞ্জনে। চলছে রমজান মাস। বাবুলকে দেখা যাচ্ছে ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। এলাকার মুসলিম ভোটারদের অ়ভিযোগ, বিজেপিতে থাকার সময় কথায় কথায় মুসলমানদের দেশছাড়া করার রাজনীতিতে অভ্যস্ত ছিলেন বাবুল। দলত্যাগ করলেই কি তাঁর মন থেকে সংখ্যালঘু বিদ্বেষ মুছে যাবে?
বালিগঞ্জ কেন্দ্রে টিএমসির গলার কাঁটা হয়ে গেছেন বাবুল। ফলে প্রচারে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্তি, ব্যক্তি বাবুল নয় আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে ভোট দিন। সেই কথা অভিষেকের পাশে দাঁড়িয়ে হজম করছেন বাবুল সুপ্রিয়।
বালিগঞ্জ কেন্দ্রে প্রায় ৫১ শতাংশ মুসলিম ভোটার। গত কয়েকটি ভোটে এর সিংহভাগ টিএমসি দখলে রেখেছে। উপনির্বাচনের হিসেবে এই ভোটের বড় অংশে চিড় ধরতে পারে এমনই আশঙ্কা টিএমসির অন্দরেই। তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা ও এলাকার মুসলিম ভোটারদের অভিযোগ, বাবুল সুপ্রিয় খোলাখুলি এনআরসি ও সিএবি সমর্থন করে দেশছাড়ার বার্তা দিয়েছিলেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল তৎকালীন বিজেপি অনুসৃত মুসলিম বিরোধী ভোট রাজনীতি। এখন তিনি জার্সি বদল করে সংখ্যালঘু বন্ধু হতে চান নিজ রাজনৈতিক চাহিদার জন্য।
বালিগঞ্জে সিপিআইএমের প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম। তিনি এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের মুখ। বাম জমানার বিধানসভা অধ্যক্ষ হাসিম আবদুল হালিমের পুত্রবধু। সিপিআইএম নেতা ডক্টর ফুয়াদ হালিমের স্ত্রী। কিংবদন্তি অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহর ভাইঝি। ফলে সায়রা প্রচারে বিপুল সাড়া ফেলেছেন।
এই কেন্দ্রে দান ছেড়ে দিয়েছে বিজেপি। প্রধান বিরোধী দলের নেতারা বলছেন, তিন নম্বরের জন্য আমরা লড়াই করব।