কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক হেলে পড়া বাড়ি (Kolkata Building Tilted) নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কিছুদিন আগেই বাঘাযতীন, ট্যাংরা এবং তপসিয়াতে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল, এবং এবার বোসপুকুরের বেদিয়াডাঙা মসজিদ বাড়ি লেনে দেখা গেল দুটি বহুতল (Kolkata Building Tilted) পরস্পরের দিকে হেলে পড়তে। এই নতুন ঘটনা শোনার পরই পুরসভা এবং বিল্ডিং বিভাগের ওপর চাপ আরও বাড়তে শুরু করেছে।
শনিবার সকালে বোসপুকুরের ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত দুটি বহুতল বাড়ি হেলে (Kolkata Building Tilted) পড়ার খবর প্রকাশ্যে আসে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এই বাড়িগুলি প্রায় চার বছর ধরে একে অপরের দিকে হেলে (Kolkata Building Tilted) রয়েছে। আর গত কয়েক মাসে সেগুলোর দেয়ালে ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে, যা ক্রমেই বাড়ছে। এভাবে বাড়ির অবস্থা খারাপ হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তবে এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুরসভায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২৬ জানুয়ারি, রবিবার হওয়ায় কোনও পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, পরবর্তী দিন সোমবার পুরসভার প্রতিনিধি দল ওই বাড়ি (Kolkata Building Tilted) দুটির পরিদর্শনে যাবে। বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা ওই বহুতলগুলো পরিদর্শন করবেন। এছাড়া, ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিজন মুখোপাধ্যায় বিষয়টি জানিয়ে পুরসভার মূল ভবনে যোগাযোগ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বহু পুরনো এই দুটি বহুতল বাড়ি দীর্ঘ চার বছর ধরে একে অপরের দিকে হেলে রয়েছে। এমনকি, এসব বাড়ির দেয়ালগুলোতে ফাটল দেখা দিয়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে আরও বড় আকার ধারণ করেছে। এই পরিস্থিতি দেখে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হলেও, প্রশাসনের কাছে আগে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি, কারণ তারা আশা করেছিলেন যে পুরসভা বিষয়টি নিজ থেকেই নজরে আনবে।
বিল্ডিং বিভাগের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বাড়িগুলোর কাঠামো খুব পুরনো হওয়ায় তা দুর্বল হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি, ভূগর্ভস্থ জলস্তরের পরিবর্তন, নিম্নমানের নির্মাণকাজ এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবও একে বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় বেআইনি নির্মাণ এবং নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করেও একাধিক বাড়ি হেলে পড়েছে বা ভেঙে পড়েছে। গত বছর মার্চ মাসে কলকাতা বন্দরে একটি বহুতল ভেঙে পড়ে, যেখানে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠে।
বোসপুকুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তারা এই সমস্যা সম্পর্কে আগে থেকেই জানতেন, তবে তা নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানোর কোনও প্রয়োজন মনে করেননি। তাদের ধারণা ছিল যে পুরসভা নিজে থেকেই বিষয়টি নজরে নিয়ে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু ফাটল বাড়ানোর পর এখন বাসিন্দাদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। তারা জানতে চান, দুটি বাড়ির মধ্যে কোনটির অবস্থা বেশি খারাপ, এবং পুরসভা কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।
কলকাতা পুরসভা ইতিমধ্যে বিভিন্ন হেলে পড়া বাড়ি চিহ্নিত করেছে এবং এই ধরনের বাড়ির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে, এখনও পর্যন্ত এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান কীভাবে হবে, সে বিষয়ে কোনও স্পষ্ট পরিকল্পনা তৈরি হয়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি এই সমস্যা দ্রুত সমাধান না করা হয়, তবে আরও বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় পড়ে থাকতে পারে। তাই, প্রশাসনের সক্রিয় হস্তক্ষেপ এবং বাসিন্দাদের সহযোগিতার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান সম্ভব বলে তারা মনে করছেন।