‘আবেদন’ই করেননি! জল-শোভনের জয়েনিং জল্পনা খারিজ তৃণমূল মুখপাত্রের?

তৃণমূলের অন্দরে এখন সব জল্পনাই জল-শোভনময় (Sovan Chatterjee) ! আর হবে নাই বা কেন, একুশে জুলাই নাকি তাঁর (Sovan Chatterjee) কামব্যাক হচ্ছে ধর্মতলার শহীদ সমাবেশে।…

Sovan Chatterjee, a former mayor, is seen joining the Trinamool Congress (TMC) party, marking a significant political development, as he is welcomed by TMC leaders and members in this photograph

তৃণমূলের অন্দরে এখন সব জল্পনাই জল-শোভনময় (Sovan Chatterjee) ! আর হবে নাই বা কেন, একুশে জুলাই নাকি তাঁর (Sovan Chatterjee) কামব্যাক হচ্ছে ধর্মতলার শহীদ সমাবেশে। কলকাতার রাজনীতিতে এখন এই জল্পনাই জোরদার। সঙ্গে আরও জল্পনা, কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকে (Sovan Chatterjee) অদূর ভবিষ্যতে ববি হাকিমের জায়গায় মেয়র হিসাবেও দেখা যেতে পারে। কিন্তু তাঁকে নিয়ে খোদ তৃণমূলের মুখপাত্রের মতামত শুনে আশাহতই হতে হবে শোভন  (Sovan Chatterjee) অনুরাগীদের।

সাম্প্রতিক সময়ে দিদির দূত হয়ে কুনাল ঘোষ এবং অরূপ বিশ্বাস শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Sovan Chatterjee) বাড়ি যাওয়া নিয়ে রীতিমতো জল্পনা ছড়িয়েছে। কলকাতার রাজনৈতিক মহলের বক্তস্বা শোভনকে (Sovan Chatterjee) খুব সম্ভবত আবারও দলে ফেরানো হতে পারে। এমনকী একুশে জুলাইয়ের মঞ্চেও তাঁকে দেখা যেতে পারে এমনটাও মনে করছিলেন তৃণমূলের অনেক কর্মী সমর্থকরা।

   

শোভন চট্টোপাধ্যায়ও (Sovan Chatterjee) গোটা বিষয়টাকে কিন্তু উড়িয়ে দেননি। তিনি কিছুটা রহস্য করেই বলেছেন, দিদি যদি চান তাহলে যোগদান হতেই পারে। যোগদানের সময়টা কি একুশে জুলাইয়েই? সেই প্রশ্নের উত্তরে নো কমেন্টস মোডেই রয়েছেন প্রাক্তন মেয়র (Sovan Chatterjee)।

BJP West Bengal: দিলীপকে পাশে বসিয়ে বিস্ফোরক সুকান্ত!

কিন্তু শোভনের (Sovan Chatterjee) যোগদান নিয়ে এবার জলঘোলা বাড়ালেন তৃণমূলেরই হেভিওয়েট মুখপাত্র। জয়প্রকাশ মজুমদার, তৃণমূলের অত্যন্ত পরিচিত মুখ এবং মুখপাত্র। একটি বেসরকারি সংবাদ চ্যানেলকে দেওয়া তাঁর বক্তব্যে রীতিমতন সংশয়ের সুর শোভনকে (Sovan Chatterjee) নিয়ে। জয়প্রকাশবাবুর পরিষ্কার বক্তব্য যে, তৃণমূলের একটি গঠনতন্ত্র এবং নিয়ম আছে। এই নিয়ম অনুযায়ী দুমদাম করে কেউ যোগদান করতে পারেন না।

প্রথমে যিনি যোগদান করতে চান তাকে একটি আবেদন করতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে কাজ করতে চান এরকম বয়ানে একটি আবেদন পত্র লিখতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সি সেই আবেদনপত্র খতিয়ে দেখার পরেই যোগদানের বিষয় চূড়ান্ত হয়।

জয়প্রকাশবাবুর প্রশ্ন, সেই আবেদনপত্র শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee) জমা দিয়েছেন কী? যদি জমা না দিয়ে থাকেন তাহলে কি করে যোগদান প্রক্রিয়া শুরু হবে? তিনি আরও বলেন, এখনও অব্দি এই ধরনের কোনও আবেদন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Sovan Chatterjee) তরফ থেকে জমা পড়েনি বলেই জানেন তিনি। সেক্ষেত্রে একুশে জুলাই এর মঞ্চে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে (Sovan Chatterjee) আদৌ দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে একটা বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হল বলে মনে করা হচ্ছে।

একুশে জুলাই তৃণমূলের শহীদ দিবসে জনবিস্ফোরণ ঘটে ধর্মতলা চত্বরে। ভিক্টোরিয়া হাউস এর সামনে তৈরী সুবিশাল মঞ্চ থেকে অভিষেক ব্যানার্জি মমতা ব্যানার্জির বক্তব্য শুনতে লাখো লাখো মানুষ ভিড় করে কলকাতার রাজপথে। কিন্তু এবার সেই একুশে জুলাই এর সভাকে ঘিরে আশা এবং আশঙ্কার আবহাওয়া তৃণমূলের অন্দরে। প্রথম আশঙ্কার নাম যদি শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee) হয়, তাহলে দ্বিতীয় আশঙ্কা খোদ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজের শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজনীতি থেকে সাময়িক বিরতি নেওয়ার ঘোষণা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগেই করেছিলেন।। তারপরে দীর্ঘদিন তাঁকে তৃণমূলের কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। সূত্রের খবর আপাতত তিনি বিদেশেই রয়েছেন চিকিৎসার জন্য। একুশে জুলাই এর আগে তিনি আবারও ফিরবেন কিনা সেই নিয়েই এখন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ঠিক যেভাবে জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্যের পরে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Sovan Chatterjee) কামব্যাক নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হল তৃণমূলে।

TMC: পাশাপাশি বসে দায় সারলেন সৌগত এবং মদন! দোষ চাপালেন পুলিশের ঘাড়ে

এই কথাটা যদি অন্য কোন ছোটোখাটো নেতা বলতেন তাহলে এতটাও ধর্তব্যের মধ্যে আনার বিষয় ছিল না।। কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে পাবলিক ফোরামে জয়প্রকাশবাবুর কথা দলেরই বক্তব্য বলে মেনে নেওয়া হয়। সেখানে দলের মুখপাত্র হিসেবে জয়প্রকাশ মজুমদার যে কথা বলছেন তা কিন্তু পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাহলে জুলাইয়ের ধর্মতলায় প্রাক্তন মেয়রকে (Sovan Chatterjee) কী দেখা যাবে না তৃণমূলের মঞ্চে?

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু বিষয়ে বেশ ভাল রকমই বিতর্কে জড়িয়েছেন ববি হাকিম। হকার এবং জবরদখল সমস্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কড়া কথা শুনতে হয়েছে তাঁকে। এছাড়াও অবৈধ নির্মাণ এবং নির্মীয়মান ফ্ল্যাটের ভেঙে পড়াতেও মুখ পুড়েছে রাজ্য সরকারের। সে ক্ষেত্রে অনেকেই মনে করছিলেন জল-শোভনকে (Sovan Chatterjee) দলে ফিরিয়ে হয়ত মেয়রের পদে বসাতে পারেন মমতা।

কিন্তু জয়প্রকাশবাবুর বক্তব্য অনুযায়ী যদি আবেদনই না করে থাকেন তাহলে যোগদান কি করে হবে? সে ক্ষেত্রে কি শোভনের (Sovan Chatterjee) অপেক্ষা আরও কিছুটা বাড়বে? কিন্তু শোভন চট্টোপাধ্যায়, (Sovan Chatterjee) তৃণমূল ছাড়ার পরেও তাকে কালীঘাটে মমতার বাড়িতে দেখা গিয়েছে। দেখা গিয়েছে ভাইফোঁটা নিতেও। নিজের প্রিয় জল-শোভনের (Sovan Chatterjee) ক্ষেত্রে ওয়াইল্ডকার্ড এন্ট্রি দেবেন কি মমতা? সেই সম্ভাবনাও থাকছে।

এমনকী দল ছাড়লেও, তৃণমূল নিয়ে খুব একটা নেতিবাচক কোন মন্তব্য করতে দেখা যায়নি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে (Sovan Chatterjee)। যদিও শোভনের (Sovan Chatterjee) বিধায়ক স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় শোভন-বৈশাখী সম্পর্ক নিয়ে একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। কিন্তু মোটের ওপর শোভন (Sovan Chatterjee) তাঁর ব্যক্তিগত জীবন এবং দল নিয়ে চুপচাপই ছিলেন বরাবর।

দিন পাঁচেক পরেই তৃণমূলের শহীদ সমাবেশ। আপাতত তৃণমূলের অন্দরে দুটো রহস্য, প্রথমটি যদি হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দ্বিতীয়টি অবশ্যই শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee)। ভিক্টোরিয়া হাউজের সামনের সেই সমাবেশের মঞ্চেই সমস্ত রহস্যের কিনারা হয়ে যাবে। তার আগে পাঁচ দিনে আর কোনও নাটকীয় পট পরিবর্তন হয় কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে কলকাতা রাজ্যের রাজনৈতিক মহল।