ট্রাম্পের শুল্ক সিদ্ধান্ত কূটনৈতিক ব্যর্থতা, মোদিকে বিঁধলেন অভিষেক

নয়া দিল্লির পথে পা বাড়ানোর আগে বৃহস্পতিবার সকালে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একহাত নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।…

abhishek speech in tokyo

নয়া দিল্লির পথে পা বাড়ানোর আগে বৃহস্পতিবার সকালে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একহাত নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা ও কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধেছেন তিনি।

দিল্লিতে লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য রওনা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বলেন, “ট্রাম্পের হয়ে প্রচার করেছিলেন কে? ট্রাম্প গুজরাটে এসে কার হয়ে প্রচার করেছিলেন? এখন যখন ট্রাম্প ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপাচ্ছেন ভারতীয় পণ্যের উপর, তখন কী বলবেন প্রধানমন্ত্রী?”

   

তিনি আরও বলেন, “এই শুল্কবৃদ্ধির ফলে শুধু আমদানি-রফতানির ক্ষতি নয়, অর্থনীতিতে বিপর্যয় দেখা দেবে। কর্মসংস্থান কমবে, শিল্পক্ষেত্রে ভাটা পড়বে। এটা যে মোদি সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা, তা পরিষ্কার।”

ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। ২০২০ সালে আহমেদাবাদের ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠানে দু’জনের ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ্যে আসে। ট্রাম্প খোলাখুলি বলেন, “মোদি একজন ভাল বন্ধু।” সেই সম্পর্কের পরিণতিতে আজকের শুল্কবৃদ্ধি—এই প্রশ্ন তুলে তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান কার্যত মোদিকে চাপে ফেলতে চাইছেন।

অভিষেক আরও বলেন, “৫৬ ইঞ্চির ছাতি নিয়ে গর্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। এখন কেন ট্রাম্পকে প্রশ্ন করলেন না? আমাদের দেশের স্বার্থ, কৃষক, মৎস্যজীবী, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প—সব কিছুর উপর এই শুল্কের প্রভাব পড়বে। কিন্তু মোদি সরকার নীরব। এটা জাতীয় লজ্জা।”

Advertisements

অন্যদিকে, বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প Truth Social-এ পোস্ট করে জানান, ভারতের উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ কার্যকর হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে মার্কিন অর্থনীতিতে ‘বিলিয়ন ডলার’ ঢুকবে বলেও দাবি করেন তিনি।

এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, “ভারত কখনও তার কৃষক ও মৎস্যজীবীদের স্বার্থে আপস করবে না। এই সিদ্ধান্তের জন্য আমি হয়তো মূল্য চোকাতে পারি, কিন্তু দেশের স্বার্থে আমি প্রস্তুত।”

তৃণমূলের দাবি, এটা শুধু অর্থনৈতিক সমস্যা নয়, একটি স্পষ্ট কূটনৈতিক ব্যর্থতা। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ধরণের নরম ও সুবিধাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির খেসারত গুনতে হচ্ছে ভারতবাসীকে।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিনের বক্তব্যে পরিষ্কার, তৃণমূল কংগ্রেস আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে জাতীয় স্তরে মোদি সরকারের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যর্থতা তুলে ধরতে মরিয়া। দিল্লি যাওয়ার প্রাক্কালে এমন আক্রমণ যে কেবল রাজনৈতিক বার্তা নয়, কেন্দ্র-বিরোধী প্রচারের শুরু, তা অনেকটাই স্পষ্ট।