ফুড ডেলিভারির জগতে নতুন দিগন্ত খুলে দিল জনপ্রিয় সংস্থা জোমাটো (Zomato)। সোমবার সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) দীপিন্দর গয়াল ঘোষণা করেন, ব্যবহারকারীদের জন্য চালু হয়েছে এক নতুন ফিচার ‘হেলদি মোড (Healthy Mode)’, যা খাবারের পুষ্টিগুণ বিচার করে অর্ডার করার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে তুলবে। গুরগাঁও-এ পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এই পরিষেবা শীঘ্রই দেশের অন্যান্য শহরেও পৌঁছবে।
দীপিন্দর গয়াল সামাজিক মাধ্যমে এক্স (X)-এ পোস্ট করে জানান, “আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি খাবার অর্ডার করার প্রক্রিয়াকে সহজ করতে। কিন্তু ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে পরিচালিত করার ক্ষেত্রে এখনও অনেক কিছু করা বাকি ছিল। এবার সেই দিকেই প্রথম পদক্ষেপ নিলাম।”
Also Read | Bolpur: বাস উলটে মৃত শিশু, আহত ৩০
নতুন ‘হেলদি মোড’ অনুযায়ী, প্রতিটি খাবারকে তার পুষ্টিগুণের ভিত্তিতে একটি স্কোর বা রেটিং দেওয়া হবে, যা Low (কম) থেকে শুরু করে Super (সর্বোচ্চ) পর্যন্ত হতে পারে। খাবারের প্রোটিন, জটিল কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের পরিমাণ অনুযায়ী এই রেটিং নির্ধারিত হবে। এই রেটিং তৈরি করতে ব্যবহৃত হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং রেস্তরাঁর ডেটা বিশ্লেষণ।
অ্যাপে ব্যবহারকারীদের জটিল পুষ্টিগত তথ্যের পরিবর্তে সহজ ভাষায় জানানো হবে কেন কোনও খাবারকে ‘হেলদি’ বলা হচ্ছে। সংস্থার দাবি, এই ফিচারটি এতটাই মানসম্মতভাবে তৈরি যে পেশাদার ক্রীড়াবিদরাও খাবার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এর উপর ভরসা করতে পারবেন।
দীপিন্দর গয়াল আরও বলেন, “জোমাটো মানুষকে সহজে খাবার অর্ডার করতে সাহায্য করেছে, কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে তাঁদের পরিচালিত করতে আমরা পিছিয়ে ছিলাম। অনেকদিন ধরেই এটা নিয়ে আমার অস্বস্তি ছিল। তাই এ উদ্যোগ আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।”
Also Read | ৪৫টি কোম্পানি এবং ৩,৫০,০০০ চাকরি; ভারত অ্যাপলের উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে উঠছে
তিনি ব্যবহারকারীদের অনুরোধ করেন নতুন ফিচারটি ব্যবহার করে তাঁদের মতামত ও পরামর্শ জানাতে, যাতে এটি আরও উন্নত ও ব্যবহারবান্ধব করে তোলা যায়। “এটাই কেবল শুরু,” গয়াল বলেন, “ভবিষ্যতে আরও উন্নতির জন্য আপনাদের ফিডব্যাক আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।”
পুষ্টিবিদদের মতে, জোমাটোর এই উদ্যোগ ভারতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়ক হতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা ওজন নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা অন্যান্য শারীরিক অবস্থার জন্য খাবার বেছে নিতে চান, তাঁদের জন্য এটি এক বড় সহায়তা হবে।
ডিজিটাল যুগে মানুষ খাবার অর্ডার করতে যত সহজ বোধ করেন, ততটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায় খাবারের পুষ্টিমূল্য বিচার করা। জোমাটোর ‘হেলদি মোড’ সেই প্রক্রিয়াকে সহজ করে তুলছে। একদিকে এটি ব্যবহারকারীদের সচেতন করছে, অন্যদিকে খাবারের জগতে এক নতুন ট্রেন্ড তৈরি করছে।