ভারতে অবৈধ ধর্মান্তরণের সঙ্গে জড়িত একটি বড় ষড়যন্ত্র চলছে (Zakir Naik)। কিছু দেশ বিরোধী মৌলবাদী তরুণ তরুণীদের মগজ ধোলাই করে তাদের ধর্মান্তকরণে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য বিতর্কিত ইসলামিক প্রচারক জাকির নায়েককে এই কার্যকলাপের প্রধান মদত দাতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
উত্তর প্রদেশের বালরামপুরে ধরা পড়া ধর্মান্তরণ গ্যাংয়ের মূল মাথা ছাঙ্গুর বাবা ওরফে জামালউদ্দিন কেবলমাত্র একটি মুখোশ হিসেবে কাজ করছিলেন বলে অভিযোগ মালব্যর । জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এবং প্রবর্তন অধিদপ্তর (ইডি) এখন এই অবৈধ কার্যকলাপের পেছনে বিদেশি অর্থের উৎস এবং এর সঙ্গে জড়িত মুসলিম দেশগুলির সঙ্গে অর্থের পথ খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে।
বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য এই ঘটনাকে ‘ভারতকে অভ্যন্তরীণভাবে ভাঙার বিশ্বব্যাপী ষড়যন্ত্র’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।সাম্প্রতিক তদন্তে উত্তর প্রদেশের অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড (এটিএস) ছাঙ্গুর বাবার ধর্মান্তরণ গ্যাংয়ের সঙ্গে জাকির নায়েকের সংযোগ উদ্ঘাটন করেছে। সূত্রের খবর, জাকির নাইকের ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন (আইআরএফ) এবং তার পিস টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশ থেকে ভারতে পাঠানো হয়েছে।
এই অর্থ পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (পিএফআই) এবং স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া (সিমি)-এর মতো সংগঠনের মাধ্যমে ধর্মান্তরণ কার্যক্রমে ব্যবহৃত হয়েছে বলে অভিযোগ। এই তদন্তে এনআইএ এবং ইডি সৌদি আরব, কাতার এবং আরব আমিরশাহী সহ একাধিক মুসলিম দেশ থেকে অর্থের প্রবাহের সন্ধান পেয়েছে।
জাকির নায়েক, যিনি ২০১৬ সালে ঢাকার হলি আর্টিসান ক্যাফে হামলার পর ভারত থেকে পালিয়ে মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অর্থ পাচার, সন্ত্রাসবাদে উস্কানি এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত। তাঁর পিস টিভি চ্যানেল, যা ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং ইংল্যান্ডে নিষিদ্ধ, ধর্মান্তরণ এবং উগ্রবাদী প্রচারণার জন্য অভিযুক্ত।
তদন্তে দেখা গেছে, নাইকের সংগঠন আইআরএফ বিদেশি অর্থের মাধ্যমে ভারতে সম্পত্তি ক্রয় এবং ধর্মান্তরণ কার্যক্রমে বিনিয়োগ করেছে। ২০১৯ সালে ইডি জাকির নাইকের বিরুদ্ধে ১৯৩ কোটি টাকার সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে, যার মধ্যে মুম্বই এবং পুনের সম্পত্তি এবং দুবাই ও লন্ডনে বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত।
অমিত মালব্য সামাজিক মাধ্যমে এই বিষয়ে বলেছেন, “জাকির নায়েক ধর্মান্তরণ মাফিয়া, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তিনি কেবল ধর্মান্তরণ নয়, বরং ‘গজওয়া-এ-হিন্দ’র মতো উগ্রবাদী এজেন্ডার অংশ।” তিনি এই তদন্তের মাধ্যমে এই ষড়যন্ত্রের গভীরতা উদ্ঘাটনের দাবি জানিয়েছেন।
এনআইএ এবং ইডি এখন এই অর্থের পথের গভীর তদন্তে নেমেছে। সূত্রের খবর, ছাঙ্গুর বাবার গ্যাং ১০০ কোটি টাকারও বেশি অবৈধ সম্পত্তি সংগ্রহ করেছে, যার বড় অংশ বিদেশি অর্থায়নের মাধ্যমে এসেছে। এই তদন্তে পাকিস্তান, সৌদি আরব এবং অন্যান্য দেশের ব্যবসায়ীদের সংযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনায় উত্তর প্রদেশ সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। মৌলানা শাহাবুদ্দিন রাজভি বেরেলভি, অল ইন্ডিয়া মুসলিম জামাতের জাতীয় সভাপতি, ছাঙ্গুর বাবার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করে তাকে সম্প্রদায় থেকে বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের কাজ শুধু অবৈধ নয়, ইসলামের নীতিরও বিরোধী।”
ভারত মালদ্বীপ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কি বার্তা দিলেন মোদী ?
এই তদন্ত ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। জাকির নায়েকের সংযোগ এবং বিদেশি অর্থায়নের তথ্য প্রকাশ্যে আসায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলি এই ষড়যন্ত্রের জড় কতটা গভীর তা খুঁজে বের করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণ এখন অপেক্ষায় রয়েছে এই তদন্তের ফলাফল জানার জন্য।