গোরক্ষপুর, ২৯ সেপ্টেম্বর: শারদীয় নবরাত্রির প্রথম দিনে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Navratri) গোরক্ষপুরের বিখ্যাত গোরক্ষনাথ মন্দিরে পবিত্র হোমানুষ্ঠান সম্পন্ন করেছেন। রবিবার সন্ধ্যায় এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তিনি গোরক্ষনাথ মঠের প্রধান পুরোহিত হিসেবে নবরাত্রির শুভ সূচনা করেন, যা রাজ্যের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি তাঁর গভীর প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে। এই হোমানুষ্ঠানে মা দুর্গার আরাধনা, রাজ্যের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা এবং জনগণের কল্যাণ কামনা করা হয়।
গোরক্ষনাথ মন্দিরে সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে যোগী আদিত্যনাথ মা শৈলপুত্রীর পূজা দিয়ে নবরাত্রির শুভারম্ভ করেন। তিনি বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে হোমকুণ্ডে আহুতি দেন এবং মন্দিরের পুরোহিতদের সঙ্গে মিলে মা দুর্গার আরাধনা করেন। এই অনুষ্ঠানে হাজার হাজার ভক্ত উপস্থিত ছিলেন, যারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রার্থনায় যোগ দেন।
মন্দির প্রাঙ্গণকে ফুল, আলো এবং রংধনু দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছিল, যা নবরাত্রির উৎসবমুখর পরিবেশকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছিল। যোগী আদিত্যনাথ নিজে গোরক্ষনাথ মঠের পীঠাধীশ্বর হওয়ায় এই অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। অনুষ্ঠানের পর যোগী আদিত্যনাথ ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, “শারদীয় নবরাত্রি শক্তি ও ভক্তির উৎসব।
মা দুর্গা আমাদের সকলের মধ্যে সত্য ও ন্যায়ের পথে চলার শক্তি জোগান। আমি রাজ্যের জনগণের শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রার্থনা করেছি।” তিনি উত্তরপ্রদেশবাসীকে নবরাত্রির শুভেচ্ছা জানিয়ে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের সঙ্গে উৎসব পালনের আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, “এই নয় দিন আমাদের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি নিজেদের পুনরায় উৎসর্গ করার সময়।”
এই হোমানুষ্ঠানের সময় গোরক্ষনাথ মন্দিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়া করা হয়েছিল। স্থানীয় পুলিশ এবং প্রশাসন ভক্তদের নিরাপদে আগমন ও প্রস্থান নিশ্চিত করেছে। গোরক্ষপুর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কুমার জানিয়েছেন, “নবরাত্রির জন্য মন্দিরে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভিড় ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।” মন্দিরে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
উৎসবের ঝলমলে আলোয় ঢাকা শহরের ভিড়ে লুকিয়ে রিজুর গল্প
নবরাত্রির এই সময়ে গোরক্ষনাথ মন্দির বাংলা ও উত্তরপ্রদেশের ভক্তদের জন্য একটি তীর্থস্থানে পরিণত হয়। বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভক্তরা গোরক্ষপুরে এসে মন্দিরে পূজা দেন, কারণ গোরক্ষনাথ মঠের ঐতিহ্য বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। এই মন্দিরে প্রতি বছর নবরাত্রিতে লক্ষাধিক ভক্ত সমাগম করেন। এ বছর মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ৫০০টি বিশেষ পূজার আয়োজন করা হয়েছে, যার মধ্যে হোম, কুমারী পূজা এবং দুর্গা সপ্তশতী পাঠ অন্তর্ভুক্ত।