এ বছরের মধ্যেই পাক-অধিকৃত কাশ্মীর চলে আসবে ভারতে। মুজফফরাবাদ নিয়ন্ত্রণ করবে দিল্লি। এমনই দাবি করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তবে এর জন্য নরেন্দ্র মোদিকে আরও একবার অর্থাৎ তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে হবে।
শনিবার উত্তরপ্রদেশের এক নির্বাচনী জনসভায় হাজির ছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। বক্তব্যে সুর চড়ান। চেনা ছন্দে বিরোধীদের আক্রমণ করেন। সেই পথেই উঠে এসেছে পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘পাক-অধিকৃত কাশ্মীর সামলাতে মুশকিলে পড়েছে পাকিস্তান। নরেন্দ্র মোদিকে তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী করে দিন। দেখবেন ছয় মাসের মধ্যে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরও ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।’
৭৭ চর ধরে অধিকৃত কাশ্মীর নয়ে বিবাদ চলছে। একাধিকবার এ নিয়ে ভারত-পাক যুদ্ধও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরকে নিজেদের দিকে টানা যে খুব সহজ কাজ নয়, তা বিলক্ষণ জানেন যোগী আদিত্যনাথ। তিনি জানিয়েছেন যে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর দখল করতে দম লাগে। তাঁর কথায়, ‘এই ধরনের কাজ করতে গেলে অনেক দম লাগে। হিম্মত থাকলেই এই ধরনের কাজ করা যায়।’ নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপির সেই দম আছে বলে দাবি করেছেন যোগী।
পাক-অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) এবারের লোকসভা ভোটে বিরাট ইস্যু হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপির ছোট-বড় নেতারা সকলেই প্রচারে বেরিয়ে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) দখলের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। এরই মধ্যে সুর চড়ান অসমের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা। বিহারে ভোটপ্রচারে গিয়ে হিমন্ত সাফ জানিয়ে দেন, পাক-অধিকৃত কাশ্মীর আসলে ভারতেরই অংশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ৪০০-র বেশি আসন দিলে উনি কাশ্মীরের ওই টুকরো পাকিস্তানের হাত থেকে ছিনিয়ে আনবেন। একই সঙ্গে মোদী সরকার মানুষের জন্য কী কী করেছে, সেই খতিয়ানও তুলে ধরেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। হিমন্ত বলেন, ‘আজ আমাদের ভারতের…কাশ্মীর তো আমাদের…কাশ্মীর তো আমাদের…কাশ্মীরের এক টুকরো কোথায় আছে? পাকিস্তানে আছে…তাই তো…কাশ্মীরের এক টুকরো কোথায় আছে…পাকিস্তানে…৪০০ সিট মোদীজিকে দিন…পাকিস্তান থেকে আমরা কাশ্মীর নিয়ে আসব…এটা আমাদের সংকল্প…’
বাংলায় ভোট প্রচারে এসেও পাক-অধিকৃত কাশ্মীর দখলের কথা বলেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায়মন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘পাক-অধিকৃত কাশ্মীর আমাদের অংশ। রাহুল বাবা, মমতা দিদি, আপনারা যতই ভয় পান না কেন, পাক-অধিকৃত কাশ্মীর আমাদের, আমরা তা ওদের থেকে নিয়েই ছাড়ব।’
মাঝে মধ্যেই পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর। গত কয়েকদিন ধরে সেই বিক্ষোভের ঝাঁজ আরও বেড়েছে। আটা ও বিদ্যুতের অত্যধিক দামের কারণে এখন বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভের জেরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন নাগরিকের মৃত্যুও হয়েছে। PoK-তে এই বিক্ষোভ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছে ভারতও। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, পাক-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভের খবর দেখছি। অবৈধ ভাবে জোর করে ওই এলাকা নিজেদের দখলে রেখে পাকিস্তান যেভাবে সম্পদ লুট করেছে, তাতে এটাই স্বাভাবিক পরিণতি।