‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যালস’র রিঙ্গার্স ল্যাকটেটের ১৬টি ব্যাচ ভুয়ো গুণমানের, চিকিৎসকদের সতর্কতা

শিলিগুড়ির বেসরকারি সংস্থা ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যালস’-এর উৎপাদিত রিঙ্গার্স ল্যাকটেট (স্যালাইন)-এর ১৬টি ব্যাচ গুণমান পরীক্ষায় ফেল করেছে বলে জানাল সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)। কেন্দ্রীয়…

West Bengal Pharmaceutical's Ringers Lactate Found Below Standards, Says CDSCO Report (January)

short-samachar

শিলিগুড়ির বেসরকারি সংস্থা ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যালস’-এর উৎপাদিত রিঙ্গার্স ল্যাকটেট (স্যালাইন)-এর ১৬টি ব্যাচ গুণমান পরীক্ষায় ফেল করেছে বলে জানাল সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)। কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, এই ব্যাচগুলি প্রত্যাশিত গুণমানের ছিল না এবং জীবাণুমুক্তও নয়।

   

সিডিএসসিও-র রিপোর্টে জানানো হয়েছে, জানুয়ারি মাসে ১৪৫টি ওষুধের ব্যাচ পরীক্ষা করা হয়েছিল, যার মধ্যে ৯৩টি ওষুধকে ‘প্রত্যাশিত গুণমানের নয়’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের ল্যাবে। তাছাড়া ৫২টি ওষুধকে ‘প্রত্যাশিত গুণমানের নয়’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে কেন্দ্রের বিভিন্ন ল্যাব থেকে। এই তালিকার মধ্যে শিলিগুড়ির ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যালস’-এর রিঙ্গার্স ল্যাকটেট (স্যালাইন)-এর নামও রয়েছে, যার ১৬টি ব্যাচের মান অত্যন্ত নিম্ন ছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিডিএসসিও-র পরীক্ষায় জানা গেছে, এই রিঙ্গার্স ল্যাকটেট (স্যালাইন)-এর ১৬টি ব্যাচ জীবাণুমুক্ত ছিল না। দুটি পরীক্ষায় তাদের মান সন্তোষজনক নয় বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সঠিক গুণমান বজায় না থাকলে এটি রোগী বা চিকিৎসার জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। স্যালাইন এবং অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীতে জীবাণুমুক্ততার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি, কারণ এটি সরাসরি রোগীর শরীরে প্রবাহিত হয় এবং যে কোনও ধরনের অবাঞ্ছিত জীবাণু বা সংক্রমণ রোগীর স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

এই রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের ভেষজ শিল্পে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা জানান, শুধুমাত্র এই ব্যাচের গুণমানের ক্ষেত্রেই রিপোর্ট প্রযোজ্য এবং অন্য ব্যাচগুলির ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। তবুও, বিষয়টি ভোক্তা সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সিডিএসসিও-র কর্মকর্তারা প্রতিমাসে বাজারে উপলব্ধ বিভিন্ন ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন এবং সেগুলোর গুণমান পর্যালোচনা করেন। গুণমান ঠিক না থাকলে, সংশ্লিষ্ট ব্যাচের ওষুধ বাজার থেকে প্রত্যাহার করা হয়, যাতে জনগণের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।

এদিকে, এই ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সিডিএসসিও-এর রিপোর্ট অনুযায়ী যদি কোনো ব্যাচে সমস্যা পাওয়া যায়, তাহলে তারা দ্রুত সেই ব্যাচটি বাজার থেকে সরিয়ে নেবে এবং পুনরায় তা পরীক্ষা করা হবে। তবে, বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, এই ধরনের পরিস্থিতিতে আরও কঠোর নিয়ম এবং নিয়মিত মনিটরিং চালু করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ভুল বা অবহেলা যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়।

গুণমান নিয়ন্ত্রণ এবং ওষুধের নিরাপত্তা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বিশেষত মানুষের জীবন-যাপনে ওষুধের গুরুত্ব। সঠিক গুণমান নিশ্চিত করতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সময় এসেছে, যাতে জনগণের স্বাস্থ্যের ক্ষতি না হয়।