ইউক্রেনের (Ukraine) যুদ্ধক্ষেত্র ঘিরে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল। বুধবার জানা গিয়েছে, রাশিয়ান ড্রোন একাধিকবার পোল্যান্ডের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। এর ফলে দেশটির রাজধানী ওয়ারশ-এর একটি প্রধান বিমানবন্দর বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন, পাশাপাশি বাসিন্দাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সামরিক (Ukraine ) প্রস্তুতিও জোরদার করেছে পোল্যান্ড।
রাশিয়ান ড্রোন বারবার ঢুকে পড়ছে পোল্যান্ডের আকাশে
পোল্যান্ডের সেনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবার সকালে ইউক্রেনে লক্ষ্যবস্তুতে হামলার সময় একাধিক রাশিয়ান ড্রোন সীমান্ত পেরিয়ে পোল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করে। পোল্যান্ডের অপারেশনাল কমান্ড সামাজিক মাধ্যমে জানায়, “আজকের দিনে রাশিয়ান ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ইউক্রেনে লক্ষ্যবস্তুতে হামলার সময় আমাদের আকাশসীমা বারবার লঙ্ঘিত হয়েছে।”
এই ঘটনার ফলে পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয় এবং দ্রুত সামরিক জেট বিমান আকাশে উড়ে যায়। **রাডার নজরদারি জোরদার** করা হয়েছে এবং প্রতিটি অনুপ্রবেশকারী ড্রোনকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
ওয়ারশ বিমানবন্দর বন্ধ ও বাসিন্দাদের সতর্কবার্তা
ড্রোন আক্রমণের আতঙ্কে রাজধানী ওয়ারশ-এর প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিমান চলাচল স্থগিত থাকায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এছাড়াও, শহর ও আশপাশের এলাকায় জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পোল্যান্ড সরকার বাসিন্দাদের বাড়ির ভেতরে থাকার এবং অনাবশ্যক যাতায়াত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে। সাইরেন বাজিয়ে জনসাধারণকে সতর্ক করা হচ্ছে, যাতে যে কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয় নেওয়া যায়।
ন্যাটো ও আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ
পোল্যান্ড ন্যাটো (NATO)-র সদস্য দেশ হওয়ায় এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। একাধিক ন্যাটো সদস্য দেশ পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, রাশিয়ান ড্রোনের এই আক্রমণ ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনা আরও ছড়িয়ে দিতে পারে** এবং ন্যাটো বনাম রাশিয়া সরাসরি সংঘর্ষের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না**।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ আরও তীব্র হচ্ছে
রাশিয়ান বাহিনী গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে। বুধবার ভোর থেকে ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী একাধিক শহরে ড্রোন আক্রমণ হয়েছে। বিশেষ করে লভিভ ও খারকিভ অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
এই হামলার ধাক্কা এতটাই তীব্র যে সীমান্তবর্তী দেশগুলো, বিশেষ করে পোল্যান্ড, সরাসরি নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।
পোল্যান্ডের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন,“আমরা আমাদের আকাশসীমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি। অনুপ্রবেশকারী ড্রোনগুলোকে শনাক্ত ও ধ্বংস করার জন্য সেনা ও বিমানবাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।”
এছাড়া, পোল্যান্ডের সরকার ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় বাড়াচ্ছে এবং সীমান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করার পরিকল্পনা করছে।
বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার আশঙ্কা
এই ঘটনার ফলে ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন এক মোড় নিতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশ ন্যাটো জোটের নিরাপত্তার ওপর সরাসরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
যদি এমন ঘটনা চলতেই থাকে, তবে রাশিয়া-পোল্যান্ড সম্পর্ক আরও অবনতি হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলবে।