রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) দু’দিনের ভারত (India) সফরকে ঘিরে দিল্লিতে চলছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। আজ সন্ধ্যায় তার আগমনের আগে থেকেই রাজধানীজুড়ে কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মী, বিশেষ SWAT টিম, স্নাইপার এবং একাধিক নিরাপত্তা ইউনিট। নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক স্তরে নজরদারি চলছে মিনিটে মিনিটে। প্রেসিডেন্টের আগমন থেকে প্রস্থান প্রতিটি গতিবিধি পর্যবেক্ষণে নিযুক্ত বিশেষ ইউনিট, জানিয়েছেন দিল্লি পুলিশের এক সিনিয়র আধিকারিক।
কূটনৈতিক ব্যস্ততার সূচি
দু’দিনের সফরে পুতিন যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে এক ব্যক্তিগত ডিনারে। সেখানে দ্বিপাক্ষিক নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে বলে কেন্দ্রের সূত্রে জানা গেছে। পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হবে ২৩তম ভারত–রাশিয়া বার্ষিক কৌশলগত সম্মেলন, দুই দেশের দীর্ঘস্থায়ী কূটনৈতিক বন্ধনের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ।
দু’দেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে অর্থনৈতিক আলাপ-আলোচনা
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত–রাশিয়া বাণিজ্যিক সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। বিদেশ মন্ত্রকের মতে, এবার আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে—
বাণিজ্যিক ও আর্থিক সমঝোতা
দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পথ
কৃষিপণ্য, সামুদ্রিক খাদ্য, প্রক্রিয়াজাত খাবার ও ওষুধপত্র রফতানির সম্ভাবনা
ভারতীয় ভোক্তা পণ্যের রুশ বাজারে বিস্তৃত সুযোগ
ভারত বিশেষভাবে জোর দিচ্ছে রাশিয়ার বাজারে দেশীয় কৃষি ও খাদ্যপণ্যের প্রবেশাধিকারের উপর। অন্যদিকে, রাশিয়ার সারের উপর ভারতের নির্ভরতা অত্যন্ত বেশি— বছরে ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ টন সার ভারত আমদানি করে। তাই সার ও কৃষিভিত্তিক সহযোগিতা বাড়ানোর দিকেও আলোচনায় গুরুত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পুতিনের এই সফর শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়। বর্তমান বৈশ্বিক ভূরাজনীতির প্রেক্ষাপটে ভারত–রাশিয়া সম্পর্ক নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার সুযোগ নিয়ে এসেছে। বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি থেকে শুরু করে ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য সব ক্ষেত্রেই এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
দিল্লির আকাশে নিরাপত্তার কড়াকড়ি আর কূটনৈতিক গতিবিধির ব্যস্ততা যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে, এই সফর হবে উল্লেখযোগ্য, বহুমাত্রিক এবং ভবিষ্যতের সহযোগিতার জন্য দিশারী।
