নয়াদিল্লি: চলতি বর্ষায় ক্ষয়ক্ষতি এবং ভবিষ্যতের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভাবনা হিসাব দর্শীয়ে কেন্দ্রের কাছে ৫৭০২ কোটি টাকার আর্থিক ত্রাণের অঙ্গীকার করল উত্তরাখন্ড সরকার। কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রীর কাছে হিসাব পাঠিয়ে আর্থিক সাহায্য চেয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা এবং পুনর্বাসন সচিব বিনোদ কুমার সুমন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, গত ১ এপ্রিল থেকে ৩ আগস্টের মধ্যে প্রবল বৃষ্টিতে হড়পা বাণ, ধ্বস, বন্যার জেরে রাজ্যের প্রায় ১৯৪৪.১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে গণপূর্ত বিভাগ এবং গ্রামীণ সড়ক বিভাগের। এখনও পর্যন্ত তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১১৬৩.৮৪ কোটি টাকা। পাশাপাশি, সেচ বিভাগের ক্ষতি হয়েছে ২৬৬.৬৫ কোটি টাকার। বিদ্যুৎ বিভাগের হিসেব অনুযায়ী ১২৩.১৭ কোটি এবং স্বাস্থ্য দফতরের ক্ষতির অংক ৪.৫৭ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, স্কুলশিক্ষা এবং উচ্চশিক্ষা দফতরের ক্ষতি হয়েছে যথাক্রমে ৬৮.২৮ কোটি এবং ৯.৪ কোটি টাকার। গ্রামোন্নয়নের ৬৫.৫০ এবং নগরোন্নয়নের ক্ষতি হয়েছে ৪ কোটি টাকার। মৎস এবং পশুপালন বিভাগের ক্ষতির পরিমাণ যথাক্রমে ২.৫৫ কোটি এবং ২৩.০৬ কোটি টাকা। এছাড়াও অন্যান্য সরকারি বিভাগের তরফে জানানো ক্ষতির পরিমাণ ২১৩.৪৬ কোটি টাকা বলে জানা গিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত নির্মাণ সংস্করণ এবং পুননির্মাণ-এর জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ১৯৪৪.১৫ কোটি টাকার আর্থিক ত্রাণ চাওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে রাস্তা, ব্রিজ, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং অন্যান্য নাররিক পরিকাঠানো মেরামতি এবং ভবিষ্যতে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য বাড়তি ৩৭৫৮ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।
গত ১ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে দেবভূমিতে ভারী বর্ষায় ৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। সেইসঙ্গে আহত হয়েছেন ১১৫ জন, নিখোঁজ ৯০। প্রায় ৩৫৯৩ টি গবাদি পশু মারা গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২৮৩৫ টি পাকা বাড়ি সহ ৪০২ টি অস্থায়ী ঘর।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১ জুন থেকে স্বাভাবিকের তুলনায় ২৫% বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে উত্তরাখন্ডে। ওই সময়ের মধ্যে ১২৬৫.৫ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগেশ্বর জেলা। স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ২৪৯% বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে সেখানে। এছাড়াও চামোলিতে স্বাভাবিকের তুলনায় ৯১%, টিহরী গাড়োয়ালে ৫৯%, আলমোড়াতে ৩৬%, দেরাদুনে ৩২% হরিদ্বারে ৫৫% এবং উধম সিং নগরে ৩৩% স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।