Uttarakhand floods: বন্যা ও ভূমিধসে উত্তরাখণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭

নিউজ ডেস্ক: কয়েকদিনের একটানা প্রবল বৃষ্টি ও ধসের কারণে উত্তরাখণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৭। ব হু মানুষের এখনও কোনও খোঁজ মিলছে না। উদ্ধারকারীদের আশঙ্কা,…

landslides in Uttarakhand

নিউজ ডেস্ক: কয়েকদিনের একটানা প্রবল বৃষ্টি ও ধসের কারণে উত্তরাখণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৭। ব হু মানুষের এখনও কোনও খোঁজ মিলছে না। উদ্ধারকারীদের আশঙ্কা, নিখোঁজদের জীবিত অবস্থায় ফিরে পাওয়া খুব কঠিন। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

বৃহস্পতিবার সকালেই পিণ্ডারি হিমবাহ অভিযানে যাওয়ার পথে চার পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। প্রবল বৃষ্টির কারণে পিচ্ছিল রাস্তায় ওই পর্যটকরা পিছলে গভীর খাদে গিয়ে পড়েন। উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ২ পর্যটক নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করতে হেলিকপ্টারে তল্লাশি অভিযান চলছে। ওই পর্যটক দলের ৩৪ জন পর্যটক পিন্ডারি হিমবাহের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন।

রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর আধিকারিক পরিতোষ ভার্মা জানিয়েছেন, ৩৪ জন পর্যটকের মধ্যে ১০ জন বিদেশি নাগরিক। এই পর্যটকদের মধ্যে বাগেশ্বর এলাকায় ৪ পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। দুজনের কোনও খোঁজ মিলছে না। একজন পর্যটক গুরুতর আহত হয়েছেন। তবে পর্যটক দলের বাকি সদস্যরা সকলেই খাতি গ্রামে ফিরে এসেছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালেও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় চলছে উদ্ধার কাজ। এদিন বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমেছে। কিন্তু আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা এখনও কাটেনি। তাই অনেকেই মনে করছেন এখনও বৃষ্টি হবে। শুধুমাত্র নৈনিতাল থেকেই ২৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

উত্তরাখণ্ডের চামোলি, পিথোরাগড়, শ্যামলাতাল, উত্তরকাশী, যোশীমঠ, মুসৌরির মতো একাধিক এলাকা এখনও জল বন্দি হয়ে আছে। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বুধবার রাতে দেরাদুনে পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার আকাশপথে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। একই সঙ্গে উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ নিয়ে রাজ্য সরকারের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এদিন জানিয়েছেন, প্রবল বৃষ্টি, বন্যা ও ধসের কারণে উত্তরাখণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শতাধিক বাড়ি জলের স্রোতে ভেসে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে নৈনিতালে। রাজ্যের একাধিক জেলায় রাস্তাঘাটের বড় মাপের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, নৈনিতালে নৈনি লেকের জল গোটা শহরকে ভাসিয়ে দিয়েছে। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ। প্রবল বর্ষণে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। তবে সেগুলি দ্রুত চালু করার চেষ্টা চলছে। বেশ কয়েকটি জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে এখনও বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করা যায়নি।

পশ্চিমবঙ্গ-সহ কয়েকটি রাজ্য থেকে আসা পর্যটকরা নৈনিতালে আটকে আছেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দুর্গত মানুষদের দ্রুত উদ্ধার করার জন্য জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ও সেনাবাহিনী একযোগে কাজ করছে। পাশাপাশি রাস্তাঘাট পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে। রাস্তাঘাট সম্পূর্ণ ভেসে যাওয়ায় বহু জায়গায় এখনও পৌঁছতে পারছে না উদ্ধারকারীরা। তাই জলবন্দি মানুষকে উদ্ধারের জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।

রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি জনিত পরিস্থিতি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহকে অবহিত করেন। উত্তরাখণ্ডের পুনর্গঠনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী শাহর কাছে আর্থিক সাহায্যের দাবিও জানিয়েছেন ধামি। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে চার ধাম যাওয়ার রাস্তাগুলি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর ফলে আগামিদিনে পর্যটনে ভালরকম নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বৃষ্টির জেরে রানিক্ষেত আলমোড়া, চামোলির মতো পর্যটকদের প্রিয় এলাকাগুলি দেরাদুন শহর থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন জেলা থেকে উদ্ধারকারীরা দেড় হাজারেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করেছে। রাজ্যের বেশ কিছু এলাকায় গঙ্গার জল এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। রাস্তাঘাট জলমগ্ন থাকায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী তীরবর্তী গ্রামের বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।