দেহরাদুন: স্বামীর রক্তে হঠাৎ ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার থেকে তাঁকে দেহরাদুনের হাসপাতালে (Hospital) নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বিস্ঠ। মুসৌরির বাসিন্দা মুকেশের কিডনির সমস্যা। সপ্তাহে দু-বার তাঁকে দেহরাদুনের (Dehradun) কৃষ্ণ মেডিক্যাল হাসপাতালে ডায়ালিসিস নিতে হয়। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে মুসৌরি থেকে দেহরাদুন যাওয়ার রাস্তার একাংশ ভেঙে যাওয়ার স্বামীকে নিয়ে গাগোলি পর্যন্ত পৌঁছন প্রিয়াঙ্কা দেবী। বুধবার অবশেষে মুসৌরির ITBP হেলিপ্যাড থেকে আরও ১১ জন রোগীর সঙ্গে দেহরাদুনে পৌঁছন মুকেশ বিস্ঠ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ভোরে দেরাদুনের সহস্ত্রধারায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টির (Cloudburst) জেরে কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ১৬ জন নিখোঁজ হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে উত্তরাখন্ডে ১৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে দেরাদুনে ১৩ জন এবং পিথোরাগড় ও নৈনিতালে একজন করে মারা গেছেন। সোমবার ও মঙ্গলবারের রাতে মেঘ ভাঙার পর বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হয়েছেন। হতাহতের পাশাপাশি, মুসৌরি সহ বেশ কয়েকটি এলাকা শহরের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং বিকল্প পথ গুলিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পর্যটন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫১১ জন পর্যটক মুসৌরিতে আটকে পড়েছেন।
বিনামূল্যে আটকে পড়া পর্যটকদের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করল হোটেলগুলি
মুসৌরির ব্যবসায়ী কল্যাণ সমতির সভাপতি রজত আগরওয়াল বলেন, “আমরা বেশ কয়েকদিন থেকেই রাজ্যে আটকে পড়া বা বিপদগ্রস্তদের সাহায্যে এগিয়ে যাচ্ছি। মঙ্গলবারই বোঝা যাচ্ছিল যে মুসৌরি রাজ্যের বাকি অংশের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। একের পর এক রাস্তা ভেঙে যাওয়ার, ধ্বসের খবর পাই। তখনই সমিতির তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে আটকে পড়া পর্যটকদের কাছ থেকে আমরা কোনও অর্থ নেব না।” তিনি আরও বলেন, “মানুষ বিপদে পড়েছেন এই সময় আমরা পয়সা-পিশাচের মত আচরণ করতে পাড়ি না। তাঁদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হোটেলে থাকা এবং খাওয়ার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছে”।
মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ত্রস্ত দেহরাদুন সহ উত্তরাখন্ড
রাজ্যজুড়ে প্রায় ১৩টি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মেরামতিতে আনুমানিক ব্যয় প্রায় ১.৫ কোটি টাকা। ২১টি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার আনুমানিক ব্যয় প্রায় ১.২ কোটি টাকা। এছাড়াও ১.৭ কোটি টাকা মূল্যের বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু আবাসিক বাড়ি, একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, একটি পঞ্চায়েত ভবন, একটি কমিউনিটি সেন্টার, ১৩টি দোকান, আটটি হোটেল এবং তিনটি রেস্তোরাঁ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিধসের কারণে সহস্ত্রধারা-কারলিগড় মোটর সড়ক নয়টিরও বেশি স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।