Uttar Pradesh: অ্যান্বুলেন্স না মেলায় ঠেলাগাড়িতেই প্রৌঢ়ার মৃত্যু বিনা চিকিৎসায়

ফের সামনে এল যোগী আদিত্যনাথ সরকারের (Uttar Pradesh) চরম প্রশাসনিক ব্যর্থতার এক উদাহরণ। স রকারি হাসপাতালে মিলল না অ্যান্বুলেন্স, ঠেলাগাড়িতেই প্রৌঢ়ার মৃত্যু হলো বিনা চিকিৎসায়।…

UP Man Takes Wife To Hospital In Cart

ফের সামনে এল যোগী আদিত্যনাথ সরকারের (Uttar Pradesh) চরম প্রশাসনিক ব্যর্থতার এক উদাহরণ। স রকারি হাসপাতালে মিলল না অ্যান্বুলেন্স, ঠেলাগাড়িতেই প্রৌঢ়ার মৃত্যু হলো বিনা চিকিৎসায়।

২৮ মার্চ উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলার আন্দাউর গ্রামে যোগনী নামে এক মহিলা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই মহিলার স্বামী অত্যন্ত দরিদ্র। তাই হাতে টাকা না থাকায় অসুস্থ স্ত্রীকে ঠেলাগাড়িতে চাপিয়েই প্রথমে নিয়ে আসেন স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখান থেকেই শুরু হয় বৃদ্ধের হয়রানি। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্ত্রীর কোনও চিকিৎসা হয়নি।

সেখান থেকে ঠেলাগাড়ি করেই স্ত্রীকে নিয়ে আসেন অপর এক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানে সরকারি চিকিৎসক তাঁর স্ত্রীকে দেখেন। কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ওই মহিলাকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। ওই হাসপাতাল থেকে জেলা হাসপাতালে দূরত্ব ছিল বেশ কয়েক কিলোমিটার। তাই ওই বৃদ্ধ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একটি অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে দেওয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রেফার করেই নিজেদের দায় সারে। অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার কোনও চেষ্টাই তারা করেনি। ওই প্রৌঢ়াকে বিনা পয়সায় জেলা হাসপাতালে পৌঁছে দিতে রাজি হয়নি কোনও অ্যাম্বুলেন্স চালক।

উপায় না দেখে ওই বৃদ্ধ ঠেলাগাড়ি করেই প্রায় ঘণ্টা তিনেক পর স্ত্রীকে নিয়ে জেলা হাসপাতাল পৌঁছন। জেলা হাসপাতাল ওই প্রৌঢ়ার চিকিৎসা শুরু হলেও রাত ১১টা নাগাদ যোগনীর (৫৫) মৃত্যু হয়। সারাদিন প্রবল গরমের মধ্যে এভাবে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতলে ঘুরতে ঘুরতে ওই মহিলার শারীরিক পরিস্থিতি অবনতি হয় বলে অভিযোগ।

স্ত্রীর মৃত্যুর পর শুকুল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে স্ত্রীর দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিতে অনুরোধ করেন। তবে অনুরোধই সার। তাঁর কথায় কেউ কর্ণপাত করেনি। তাই ওই বৃদ্ধ স্ত্রীকে নিয়ে ফের ঠেলাগাড়ি করেই বাড়ির পথে রওনা দেন। তবে ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকায় কিছু সহৃদয় মানুষ তাঁকে বাড়ি ফেরার জন্য একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন।

সম্প্রতি ওই বৃদ্ধের ঠেলাগাড়ি করে স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, অসুস্থ এক প্রৌঢ়াকে ঠেলাগাড়িতে চাপিয়ে কোনও রকমে কষ্ট করে গাড়িটি টেনে নিয়ে যাচ্ছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ শুকুল প্রজাপতি। ভিডিওটি সামনে আসতেই শুরু হয়েছে চাপান-উতোর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একে অন্যের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। তবে বিষয়টি যোগী প্রশাসনের কর্তারা জানতে পেরে কেন ওই প্রৌঢ়ার চিকিৎসা হয়নি, কেন অ্যাম্বুলেন্স মেলেনি তা জানতে একটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রিজেশ পাঠকও ওই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তবে শকুলের স্ত্রীর মৃত্যুর এই ঘটনা ফের একবার যোগী রাজ্যের বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সামনে এনেছে। যোগী রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে যে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিকাঠামো নেই তা আরও একবার স্পষ্ট করেছে এই ঘটনা। নেটিজেনরা অনেকেই বলেছেন, সময়মতো জেলা হাসপাতাল বা অন্য জায়গায় বৃদ্ধার চিকিৎসা হলে তাঁকে এভাবে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হত না।